নাজিম আক্তার, চাঁচল: বৃষ্টির মধ্যে নর্দমা সাফাইয়ের নামে জেসিবি মেশিন দিয়ে যথেচ্ছ ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ উঠেছে সিপিএমের এক গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যের বিরুদ্ধে। রবিবার সকালে মালদহের চাঁচলে এই ঘটনাকে ঘিরে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। সিপিএমের ওই সদস্যকে দাঁড়িয়ে থেকে মদত দিয়েছেন স্থানীয় এক তৃণমূল নেতা বলে অভিযোগ উঠেছে। নর্দমার উপরে থাকা বাড়িতে ও পাড়ায় ঢোকার কংক্রিটের পাটাতন ভেঙে দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া বাড়ির সামনে বসার জায়গাও ভেঙে দেওয়া হয়। জেসিবি মেশিনের তান্ডবে বাড়ির দেওয়ালেও ফাটল ধরেছে বলে অভিযোগ। ঘটনার জেরে বাড়িতে ও পাড়ায় যাতায়াতে সমস্যায় পড়েছেন বাসিন্দারা। পাশাপাশি কংক্রিটের পাটাতন রাস্তায় ফেলে রাখায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে যান চলাচল। মহকুমাশাসক ও পঞ্চায়েতের নির্দেশ রয়েছে এমনই কথা বলে ওই ভাঙচুর চালানো হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। পরে অবশ্য ব্লক তৃণমূল সভাপতি রুখে দাঁড়ানোয় কাজ বন্ধ করে জেসিবি মেশিন ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
যদিও এমন নির্দেশের কথা অস্বীকার করেছেন মহকুমা শাসক। পাশাপাশি পঞ্চায়েতের তরফেও এমন নির্দেশের কথা অস্বীকার করা হয়েছে।
চাঁচলের মহকুমাশাসক সঞ্জায় পাল বলেন, এমন কোনও নির্দেশ দেওয়া হয়নি। কারা ওই ঘটনায় জড়িত তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ক্ষতিপূরণের বিষয়টিও দেখা হবে। দ্রুত যাতে রাস্তার জঞ্জাল সরিয়ে দেওয়া যায় তা দেখা হচ্ছে।
বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এদিন সকলেই ভাঙো, ভাঙো রব শুনে জেগে ওঠেন। দেখেন যে জেসিবি মেশিন দিয়ে যথেচ্ছভাবে ভাঙচুর চালানো হচ্ছে। নর্দমা সাফাই করার কথা থাকলেও কোনও ট্রলি ছিল না। গ্রাম পঞ্চায়েতের সিপিএম সদস্য মজিমুল হক রব্বানি পাশাপাশি স্থানীয় এক তৃণমূল নেতাকে নেতৃত্ব দিতে দেখা যায়। স্থানীয় বাসিন্দা নন্দদুলাল কর্মকার বলেন, বাড়ির সামনের পাটাতন, নিজের জায়গায় থাকা বসার কংক্রিটের পাটাতন সবই ভেঙে দিয়েছে। দেওয়ালেও ফাটল ধরেছে। প্রশাসনের কাছে ক্ষতিপূরণের দাবি জানাব। পাশাপাশি যারা প্রশাসনের নামে মিথ্যে বলে এ কাজ করেছে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।
জাহাঙ্গীর জাহিদ নামে এক বাসিন্দা বলেন, মহকুমাশাসকের নির্দেশ বলে ওরা ভেঙে দেয়। তাই বাধা দিইনি। চাঁচল-১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি সচ্চিদানন্দ চক্রবর্তী বলেন, পঞ্চায়েত কিছুই জানে না। কাদের মদতে এসব হল তা প্রশাসনকে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিতে হবে।
সিপিএম সদস্য রব্বানি বলেন, ইচ্ছে করে ভাঙচুর করা হয়নি। কাজের সময় ভেঙে গিয়েছে।
চাঁচল গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান উত্পল তালুকদার বলেন, আমরা এ বিষয়ে কিছু জানি না। পঞ্চায়েতর অনুমতি না নিয়েই এ কাজ করা হয়েছে। ওই সদস্যের বিরুদ্ধ আইনানুগ ব্যবস্থার পাশাপাশি ক্ষতিপূরণের বিষয়টিও পঞ্চায়েতের তরফে আলোচনা করে দেখা হবে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct