জৈদুল সেখ, খড়গ্রাম: মুর্শিদাবাদের খড়গ্রাম থানার অন্তর্গত সাদল গ্রাম পঞ্চায়েতের সুড়খালী থেকে নওদা পর্যন্ত প্রায় তিন কিমি রাস্তা দীর্ঘদিন ধরেই বেহাল অবস্থা, গত দশ বছর ধরে, বার বার প্রশাসনকে জানিও মিলেনি সরকারি কোনো সাহায্য, অবশেষে গ্রামের মানুষ চাঁদা সংগ্রহ করে নিজেরাই মঙ্গলবার থেকে রাস্তা মেরামত করতে শুরু করল।
উল্লেখ্য কান্দী এবং খড়গ্রামের মাঝে দ্বারকা নদী, এই নদীর উপর রয়েছে মাটির নির্মিত বাঁধ, যে বাঁধের উপর দিয়ে নওদা, সুন্দরপুর, রতনপুর, খেসর, পাথায়, মাড়গ্রাম, নগরসহ আসে পাশের বারোটি গ্রামের লোক যাতায়াত করে। যার একমাত্র ভরসা বাঁধের এই তিন কিমি রাস্তা। এই এলাকার মানুষের সবচেয়ে বড়ো সমস্যা বা বিপদে পড়ে বর্ষার সময়। বৃষ্টির জলে এক হাঁটু জলকাদা ডিঙিয়ে যাওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে উঠে। নওদা, সুন্দরপুর, রতনপুর গ্রামের মানুষকে চিকিৎসা, শিক্ষা এবং ব্যবসার কাজে বহরমপুর যাওয়ার জন্য অতিরিক্ত ২৪ কিমি রাস্তা ঘুরে শেরপুর গাঁতলার উপর দিয়ে অথবা খড়গ্রাম কান্দী হয়ে যেতে হয়। এতে তাদের খরচ বাড়ে তাই নয় অতিরিক্ত সময় নষ্ট হয় আবার হয়রানিও বাড়ে।
এলাকার বিশিষ্ট শিক্ষক দেলোয়ার সেখ বলেন, ‘রাস্তা খারাপের জন্য অনেক সময় অসুস্থ রোগী রাস্তাতেই মারা যায়। তাছাড়া এলাকায় কোনো হাইস্কুল না থাকায় পড়ুয়াদের ৫ কিমি দূরে নবপল্লি হাইস্কুল যেতে হয় খুব কষ্টে। সবচেয়ে দুশ্চিন্তার বিষয় গত পাঁচ বছর ধরে রাস্তার অসুবিধার কারনে অনেকে স্কুল ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছে। যার ফলে গ্রামগুলোতে উচ্চ শিক্ষার হার নিম্নমুখী।’ গ্রামবাসী রুবেল বলেন, এই রাস্তা মেরামত জন্য গত দশ বছর ধরে পঞ্চায়েত এবং বিধায়ক এমনকি বিডিও কে জানিয়েও কোনো লাভ হয়নি, যখন ভোট আসে তখনই প্রতিশ্রুতি দেয় কিন্তু ভোটের পর কেউ কথা রাখেনি।
এলাকার বাসিন্দা ফাইম সেখ জানায়, আমরা গ্রামের সকলেই এই রাস্তা মেরামত করার দাবী জানিও একবারও সংস্কার না হওয়ায় বাধ্য হয়ে গ্রামবাসী মিলে চাঁদা তুলে নিজেরাই পাথরের টুকরো এবং ডাস দিয়ে রাস্তার কাজ করার চেষ্টা করছি কিন্তু এটা স্থায়ী থাকবে না। তাই সরকারের কাছে স্থায়ী ঢালাই কংক্রীট বা পিচ রাস্তার দাবি জানাচ্ছি। রাজ্য সরকারের ঘোষণা মতো পথশ্রী প্রকল্পের কোটি কোটি টাকা ব্যয় করা সত্ত্বেও গ্রামবাসীদের এ হেন সমস্যা থাকায়, পথশ্রী প্রকল্প নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন। এখন দেখার বিষয় দুয়ারে সরকার পথশ্রীর মাধ্যমে দীর্ঘ দশ বছরের সমস্যা সমাধান করে কী না?
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct