নাজিম আক্তার, হরিশ্চন্দ্রপুর: পড়াশোনা খেলাধুলা করে কাটাবার বয়সে জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রায় ছয় মাস ধরে বিছানায় শয্যাশায়ী দশম শ্রেণির ছাত্রী সিমা পারভিন(১৬)। মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর-১ নং ব্লকের তুলসীহাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের সালালপুর গ্রামের বাসিন্দা সিমা। বাবা সইদুল ইসলাম পেশায় একজন দাঁত মাজন বিক্রেতা। মেয়ের চিকিৎসার জন্য অর্থ জোগাড় করতে দিশেহারা পরিবার। বর্তমানে লকডাউনের জেরে সইদুলবাবু হারায় তার কর্মসংস্থান। ফলে থমকে গিয়েছে সিমার চিকিৎসা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির কাছে কাতর আবেদন বাবার। চিকিৎসার আশায় মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে মেয়ের পাশে বসে লিখলেন চিঠি।
জানা যায় সিমা তুলসীহাটা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্রী। গত ছয়মাস ধরে স্নায়ু সহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত। কিন্তু এই পরিস্থিতিতেও জীবনের সর্বস্ব দিয়ে মেয়ের চিকিৎসা করিয়ে আসছে সিমার বাবা সইদুল ইসলাম। তবে করোনার পরিস্থিতিতে কর্মহীন হয়ে পড়েছে সইদুলবাবু। আর এতেই থমকে গিয়েছে মেয়ের চিকিৎসা। বর্তমানে মেয়ের চিকিৎসার খরচ না জোগাড় করতে পেরে দুচিন্তায় রয়েছে পরিবার। সিমার বাবা সইদুল ইসলাম জানান তার এক ছেলে ও এক মেয়ে এবং স্বামী-স্ত্রী সহ মোট চারজনের অভাবের পরিবার। সিমা ছোট। পাড়াশোনার পাশাপাশি নামাজ পড়ত ও কুরআন তেলাওয়াত করত। হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে ধীরে ধীরে পা ও কোমর অসাড় হয়ে যায়। মেয়ের চিকিৎসায় সঞ্চিত অর্থ শেষ হয়ে গেছে। হাটে হাটে দাঁত মাজন বিক্রি করে কোনোরকমে পরিবারের মুখে দুমুঠো অন্ন তুলে দেন। লকডাউনের কারণে প্রায় এক মাস ধরে বন্ধ রয়েছে হাট। কাজ হারিয়ে কর্মহীন হয়ে বাড়িতে বসে রয়েছে। ধার দেনা করে মালদায় এক বেসরকারি নার্সিং হোমে মেয়ের চিকিৎসা করালেও এখন টাকার অভাবে থমকে রয়েছে চিকিৎসা। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে চিঠি লিখে মেয়ের চিকিৎসার আবেদন করেছেন। ‘দুয়ারে সরকার’-এ স্বাথ্যসাথী কার্ডের জন্য আবেদন করলেও এখনো পর্যন্ত হয়নি কার্ড। অপর দিকে সিমার মা জানান মেয়ে হাঁটাচলা করতেই পারে না। সবসময় বিছানায় শুয়ে থাকে। কোমর ও পা নিথর হয়ে পড়েছে। দিনের পর দিন পা দুটি শোরু হয়ে যাচ্ছে। ডাক্তারবাবুরা দ্রুত বেঙ্গালুরু নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। খরচ হবে প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকা। কোথায় পাবো এতো টাকা? চিন্তায় উড়েছে ঘুম। এখন সরকারি সাহায্যের আশায় কাটছে দিন।
স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য মহম্মদ আলম হরিশ্চন্দ্রপুর-১নং ব্লক প্রশাসনকে বলে দ্রুত স্বাথ্য সাথী কার্ড ও হুইল চেয়ারের ব্যবস্থা করিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেন।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct