রাজু আনসারী, অরঙ্গাবাদ: ভাঙন প্রতিরোধে পর্যাপ্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করার দাবি জানিয়ে গঙ্গার ধারে হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে অভিনব প্রতিবাদ বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হল মুর্শিদাবাদের সামসেরগঞ্জে। বুধবার সামসেরগঞ্জের ধানঘরা থেকে শুরু করে শিবপুর, চাচন্ড সহ প্রায় ছয়টি গ্রামের মানুষ নদীর ধারে হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে প্রতীকি প্রতিবাদ করেন। গঙ্গা ভাঙন প্রতিরোধ কমিটি ও গ্রামবাসীদের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এই আন্দোলন মূলত করোনা ভাইরাসের এই কঠিন সময়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এবং মুখে মাস্ক নিয়ে অল্প সংখ্যক মানুষ নিয়ে প্রতীকি প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এদিন ভাঙন কবলিত এলাকার মানুষদের স্বার্থে এবং ভাঙন নিরসনে পর্যাপ্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করার দাবি জানান সাধারণ মানুষ।
ভাঙন প্রতিরোধে পর্যাপ্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করার সাধারণ মানুষদের হাতে ফেস্টুনে লেখা ছিল গঙ্গা নদীর বিশাল ভাঙ্গন, ছিনিয়ে নিল বসত জীবন, ছিল বস্তি ছিল ভিটা নেই তো এখন ছিটেফোঁটা, মাঠ-ঘাট শস্য ক্ষেত গঙ্গা গর্ভে সবই শেষ, বস্তি ভিটা জমিজমা-নেই কিছু আর নেই সীমানা,
উল্লেখ করা যেতে পারে, গতবছরের ঠিক এই সময়ে ভয়াবহ গঙ্গা ভাঙনে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায় হাজার হাজার বিঘা চাষযোগ্য জমি। প্রায় কয়েক শো বাড়িঘর। ভিটেমাটি হারিয়ে এখনও নিঃস্ব হয়ে জীবন যাপন করছেন কয়েক শো পরিবার।
ভাঙন প্রতিরোধে পর্যাপ্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য প্রশাসন কিংবা রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বারস্থ হলেও হয়নি স্থায়ী সুরাহা। বছর ঘুরতেই ফের নতুন করে ভাঙন আতঙ্ক শুরু হয়েছে সামসেরগঞ্জের বিভিন্ন গ্রামে। তাই এবার ভাঙন প্রতিরোধে পর্যাপ্ত পদক্ষেপ গ্রহণ ও স্থায়ী সমাধানের দাবি জানিয়ে অভিনব কায়দায় প্রতিবাদ দেখালো গ্রামবাসীরা। অবিলম্বে ভাঙন প্রতিরোধের ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে আগামীদিনে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন সাধারণ মানুষ।
স্থানীয় বাসিন্দা সুখতারা বিবি ও সুকহমন বিবি বলেন, আমারা এই গঙ্গা ভাঙনে হাজার হাজার বাড়ি সব নদীর গর্ভে তলিয়ে যেতে দেখেছি। নদী এখন আমাদের বাড়ি কাছে এসে পৌঁছেছে। আমরা বিড়ি শ্রমিক বিড়ি বেধে সংসার চালায়, লোন নিয়ে বাড়ি বানিয়েছি আমাদের কোন জায়গা জমি নেই, সরকারের কাছে আবেদন রাখছি আমাদের এই গঙ্গা তাড়াতাড়ি বাঁধানো হয় আমরা আর কিছুই চাই না আমরা খেটে খাবো বিড়ি বেঁধে সংসার চালাবো। গঙ্গা ভাঙ্গন প্রতিরোধ কমিটির সেক্রেটারি রতন কুমার দাস জানান সপ্তাহ খানেক আগে ডিএম ও জেলার এসপি সাহেব গঙ্গা ভাঙ্গন এলাকা ও জলপথ ঘুরে দেখেছে কিন্তু এখনো পর্যন্ত কোনো অর্থ বরাদ্দ হয়নি, ২৭ কোটি টাকা খবরে শুনেছিলাম অর্থ বরাদ্দ হয়েছে, বাস্তবে কিছুই হয়নি আমারা জঙ্গিপুর সের্চ দপ্তরের কাছে খবর নিয়েছিলাম তারা আমাদের জানিয়েছে টেন্ডার হওয়ার কথা ছিলো কিন্তু এখনো পর্যন্ত কোনো টেন্ডার হয়নি। এখন যদি বর্ষার আগে নদী বাধানো না হয় তাহলে ৫০ গ্রামের হাজার হাজার বাড়িঘর সামাসেরগঞ্জের মানচিত্র থেকে নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। তাই আমরা দৃষ্টি আকর্ষণ করছি অতি শীঘ্রই এই গঙ্গা ভাঙ্গন বাধানোর কাজ দ্রুত চালু করা হয় রাজ্য সরকার ও কেন্দ্র সরকারের কাছে আবেদন রাখছি আমাদের এই গঙ্গা তাড়াতাড়ি বাঁধানো হয়।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct