আপনজন ডেস্ক: ফিলিস্তিনে এখন যুদ্দা বিরতি চলছে। কিন্তু তার আগে ইসরাইল যেভাবে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা বরুদ্দ করে টানা ১১দিন বোমা হামরা চারিয়ে গেছে তার প্রভাব পড়েছে সেকানকার শিশুদের মধ্যে। বিমান হামলার স্মৃতি মনে পড়তেই শিশুরা মানসিক ভাবে বিদ্বস্ত হযে পড়ছে। এভাবে মানসিক বৈকল্যের শিকার হয়েছে হাজার হাজার শিশু। ফিলিস্তিন মুক্তি সংগঠন হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠার পর গাজার অধিবাসীরা ইসরায়েলের নির্বিচার বোমা হামলার দুঃস্বপ্ন ও ধকল কাটিয়ে উঠে বিধ্বস্ত–ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িঘরে ওঠার চেষ্টা করছে। সেই সঙ্গে গাজার মায়েরা ও স্বাস্থ্যকর্মীরা এমন উদ্বেগ, আশঙ্কা প্রকাশ করছেন যে ইসরায়েলের সহিংসতার ফলাফল হিসেবে গাজার শিশুদের দীর্ঘদিন ধরে মানসিক ক্ষতি বয়ে বেড়াতে হতে পারে।
গাজার উত্তরাঞ্চলীয় বেইত হানুন এলাকার বাসিন্দা হালা সেহাদা ২৮ বছর বয়সী একজন মা। তিনি আল–জাজিরাকে বলেন, মে মাসের শুরুর দিকে ইসরায়েলি বাহিনী যখন বিমান হামলা শুরু করল, তখন ২০১৪ সালে গাজায় চালানো ইসরায়েলের রক্তক্ষয়ী অভিযানের মর্মস্পর্শী স্মৃতিগুলো তাঁর মনে ভেসে উঠছিল। মনে হচ্ছিল, এই তো ‘গতকালই’ ওই হামলা শেষ হল। এখনই আবার হামলা। সেহাদা বলেন, ‘গাজায় সাম্প্রতিকতম হামলা আমাকে ছয় বছর আগের ঘোর অন্ধকারাচ্ছন্ন স্মৃতিতে ফিরিয়ে নিয়ে যায়। ওই বছর আমার স্বামী নিহত হন। কিন্তু এবার আমার অবস্থা আরও খারাপ। আমার ছয় বছর বয়সী মেয়ে টোলেন ওর বাবা নিহত হওয়ার পাঁচ মাস পর জন্মগ্রহণ করে। এবারের বোমা হামলায় ছোট্ট মেয়েটা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছে।’
অবরুদ্ধ এ উপত্যকায় সাম্প্রতিকতম বোমা হামলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার হয়েছে শিশু ও কিশোর–কিশোরীরা। ইসরায়েলের বিমান থেকে বোমাবর্ষণ এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নিহত হয়েছে ২৫৩ জন ফিলিস্তিনি। তাদের মধ্যে শিশুই ৬৬টি। হামলায় আহত হয়েছে অনেক শিশুসহ ১ হাজার ৯০০–এর বেশি মানুষ।
আন্তর্জাতিক চাপের মুখে গত ২১ মে ইসরায়েল হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে উপনীত হয়েছে। কিন্তু বহু গাজাবাসীর দুর্দশা ঘোচেনি। ইতিপূর্বে ২০১৪ সালে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর ৫১ দিনের বোমা হামলায় তাঁদের অনেকে এক দফা মানসিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হয়। সেই ক্ষতি পুরোপুরি না কাটতেই আবার হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। ওই অভিযানে নিহত হয় ২২০০ ফিলিস্তিনি। তাদের মধ্যে শিশুই ৫০০।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct