কুতুবউদ্দিন মোল্লা, ক্যানিং: একের পর এক প্রাকৃতিক বিপর্যয় আছড়ে পড়ছে সুন্দরবনের উপর। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে জর্জরিত সমগ্র সুন্দরবনের মানুষজন সহ অন্যান্য জীবকুল। বিভিন্ন সময়ে সুন্দরবনের বুকে আছড়ে পড়া প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়ে কখনও অনাহারে হারাতে হচ্ছে প্রাণ। কখনও বা বেঁচে থাকার আশ্রয়টুকুও হারাতে হচ্ছে। প্রকৃতির খোলা আকাশের নীচে বসবাস করতে হচ্ছে চাতকের ন্যায়। চিরাচরিত ভাবে এমনই চলে আসছে আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন বিশ্বের বৃহত্তম ব-দ্বীপ সুন্দরবন। উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার ১৯ ব্লক নিয়ে সুন্দরবন। ছোট, বড় মিলিয়ে বর্তমানে ১০২ দ্বীপ রয়েছে। প্রায় পঞ্চাশ লক্ষ মানুষের বসবাস। মানুষ সহ রয়েছে বিভিন্ন বন্যপ্রাণী, বিভিন্ন ধরণের পক্ষীকুলও। বিগত দিনে আয়লা, ফণি, বুলবুল, আম্ফানের মতো প্রাকৃতিক বিপর্যয় ‘ইয়াস’ সমগ্র সুন্দরবনের উপকুল এলাকায় তান্ডব চালিয়েছে ২৬ মে। জলোচ্ছ্বাস ও নদীবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে সমগ্র সুন্দরবন। প্রবল জলোচ্ছ্বাসে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে সুন্দরবন বাসী। পাশাপাশি জলের তোড়ে ভেসে গিয়েও প্রাণে বেঁচেছে বন্য হরিণ। তবে হরিণ প্রাণে বাঁচলেও সুন্দরবনের গভীর অরণ্যে মিষ্টি জল না পেয়ে অনাহারে মারা গিয়েছে সুন্দরবনের রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার। এসবের মাঝে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সু্ন্দরবনের সমস্ত প্রজাতির পক্ষীকুল। ইয়াসের তান্ডব আর জলোচ্ছ্বাসে ভেঙে তছনছ হয়ে গিয়েছে অজস্র পাখির নীড়। নীড়হারা পাখিরা যাতে করে বাসায় ফিরতে পারে তারজন্য অভিনব উদ্যোগ নিলেন সুন্দরবনে এক যুবক তৈরী করলেন কৃত্রিম বাসা। বাসার জন্য মাটির ভাঁড় নিয়ে সুন্দরবন সংলগ্ন বিভিন্ন গাছে বেঁধে দিচ্ছেন।
তাতে করে পাখিরা ফিরে পাবে তাদের আস্তানা এমনই দাবী যুবকের। যুবক ফারুক আহমেদ সরদার এমন অভিনব উদ্যোগ সম্পর্কে জানিয়েছে “প্রাকৃতিক দুর্যোগে সাধারণ মানুষের যেমন ক্ষতি হয়েছে, তেমনই পাখিদের ও ক্ষতি হয়েছে। প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য পাখিদেরও বেঁচে থাকার অধিকার রয়েছে। সেই কারণে বাসাহীন পাখিরা যাতে বাসা ফিরে পায় তার জন্য এমন উদ্যোগ নিয়েছি।”
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct