দিলীপ মজুমদার: এবারের বিধানসভা নির্বাচনের আগে একটা স্লোগান ঘুরে বেড়াচ্ছিল দেশময়। ‘খেলা হবে’। এই স্লোগান শুনে আমার বেশ কয়েকজন বন্ধু বিরূপ মন্তব্য করেছিলেন। একজন রাজনীতি বিশারদ প্রকাশ করেছিলেন আশঙ্কা। তিনি খেলাকে মারামারির, রক্তারক্তির খেলা বলে মনে করেছিলেন। দোষ নেই এঁদের। ‘খেলা’ শব্দটির যে প্রতীকী ব্যঞ্জনা ছিল, তা নষ্ট করেছিলেন দুজন তৃণমূল নেতা। একজন মমতা ব্যানার্জী। তিনি একটা ফুটবল নিয়ে বিভিন্ন মঞ্চে দেখা দেন। ‘খেলা হবে’ স্লোগানটা আওড়াতে আওড়াতে ফুটবলটা ছুঁড়ে দেন। বীরভূমের তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল ‘ভয়ঙ্কর খেলা হবে’ বলে প্রায় চ্যালেঞ্জ জানান। এর থেকেই আশঙ্কা তৈরি হয়। সে যাই হোক, ‘খেলা হবে’ শব্দদুটি দেশময় ব্যাপক ঝংকার তুলেছিল। বিরোধীরাও শব্দদুটি ব্যবহার করতে থাকেন। প্রধানমন্ত্রীও বলেন “খেলা হোবে’। শুধু রাজনীতির ময়দানে নয়, ‘খেলা হবে’ স্লোগান ঢুকে পড়েছে আমাদের সমাজে। পিকনিকে, সরস্বতী পুজোয়, ব্যক্তিগত কথোপথনে উচ্চারিত হয় শব্দদুটি।
স্লোগানটির প্রবর্তক কে? শুভেন্দু অধিকারীর মতে বছর চারেক আগে বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জের সাংসদ সামিম ওসমান প্রথম এই স্লোগান ব্যবহার করেন। বীরভূমের তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলের মতে এ স্লোগান বীরভূমের লালমাটিরই স্লোগান। বছর তিনেক আগে বোলপুরের এক ঘটনায় অনুব্রত ডিএসপিকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, ‘ভয়ঙ্কর খেলে দেবো।’ কিন্তু এই স্লোগানটিকে একটি গানে বেঁধে যিনি গোটা দেশে ছড়িয়ে দিয়েছেন তিনি মাত্র পঁচিশ বছরের এক যুবক দেবাংশু ভট্টাচার্য। হাওড়ার বালি অঞ্চলের বাসিন্দা দেবাংশু সিভিল এঞ্জিনিয়ার। রাজনীতিতে আগ্রহহীন এক মধ্যবিত্ত পরিবারে তাঁর জন্ম। ২০১১ সালে এক ফেসবুকে অ্যাকাউন্ট খোলেন তিনি। তারই মাধ্যমে মমতা ব্যানার্জীর প্রতি সমর্থন জানান। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের সময় তিনি কয়েকটি স্লোগান লেখেন। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য দুটি হল : ‘মমতা ব্যানার্জী আর একবার’, ‘ দিল্লি যাবে হাওয়াই চটি’। এবারের বিধানসভা নির্বাচনের সময় তিনি কোচবিহারের এক জনসভায় গিয়েছিলেন। সেখানেই মাঠে বসে ২০ মিনিটে ‘খেলা হবে’ স্লোগানটি দিয়ে ১২ স্তবকের গান রচনা করেন। ৬ জানুয়ারি ভিডিয়ো হয়। তারপরে ডিজে মিউজিকের সঙ্গে সে গান বাজতে থাকে গোটারাজ্যে। ‘খেলা হবে খেলা হবে’ গানটির ধ্রুবপদ। আমরা এই গানটির জনপ্রিয়তা ও প্রভাবের দিক আলোচনা করব। প্রথম স্তবকে ‘বহিরাগত’ তত্ত্বকে তুলে ধরা হয়েছে। এখানে ডেলি প্যাসেঞ্জারের মতো দিল্লি থেকে এসেছেন নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহ, কৈলাস বিজয়বর্গীয় ইত্যাদি নেতারা। এঁদেরই তুলনা করা হয়েছে ‘বর্গী’র সঙ্গে। এই বিজেপির সঙ্গে হবে ‘খেলা’ বা রাজনৈতিক লড়াই। ‘বাইরে থেকে বর্গী আসে/ নিয়ম করে প্রতিমাসে/ আমিও আছি তুমিও আছ
বন্ধু এবার খেলা হবে।’
দ্বিতীয় স্তবকে দলত্যাগীদের কথা বলা হয়েছে। ভয় ও প্রলোভনে তৃণমূলের বহু নেতাকে বিজেপি দলে টানার খেলা শুরু করেছিল। ভেবেছিল শুভেন্দু অধিকারী, রাজীব ব্যানার্জি প্রমুখ হেভিওয়েটদের দলে টেনে দুর্বল করে দেবে মমতার দলকে। কিন্তু তাদের খেলার বিরুদ্ধে খেলবে মমতার দল। এই প্রত্যয়টা মানুষের মনে গেঁথে দিলেন লেখক।
‘তৃণমূলের ভাঙিয়ে নেতা/ নয়কো সহজ ভোটে জেতা/ দিদির ছবি সরবে যবে
বন্ধু, সেদিন খেলা হবে।’
তৃতীয় ও চতুর্থ স্তবকে মমতা সরকারের জনমুখী প্রকল্প তুলে ধরা হয়েছে। বলা হয়েছে কন্যাশ্রী ও স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের কথা। এই সরকার নারীকে বিশেষ ক্ষমতা ও অধিকার দান করেছে। তাই তারা তাদের স্বাস্থ্য ও জীবিকার যুদ্ধে জয়লাভ করছে।
‘কন্যাশ্রী বোনটা আমার/ হচ্ছে যখন ইঞ্জিনিয়ার/ যুদ্ধ সে বোন জিতেই লবে
বন্ধু এবার খেলা হবে।/ বুড়ি মায়ের স্বাস্থ্যসাথী/ ফুলিয়ে বলে বুকের ছাতি
অপারেশন ফ্রিতে হবে/ খেলা হবে খেলা হবে।’
পঞ্চম স্তবকে আছে কৃষক জনতার কথা। তারাও আছে মমতার সঙ্গে। তবে এই স্তবকে ব্যঞ্জনা স্পষ্ট হয় নি। এটা গানের কথার দিক থেকে দুর্বল। প্রথম তিনটি স্তবকে এবং বর্তমান স্তবকে প্রতিপক্ষকে ‘বন্ধু’ বলে সম্বোধন করা হয়েছে, এটি রাজনৈতিক লড়ায়ের সৌজন্যেরই উদাহরণ।
‘কব্জি যদি শক্তিশালী/ মাঠে আছে লড়নেওয়ালি/ বন্ধু বলো আসছ কবে
খেলা হবে খেলা হবে।’
ষষ্ঠ স্তবকে বিজেপিশাসিত দুটি রাজ্যের সঙ্গে বাংলার তুলনা করা হয়েছে। বলা হয়েছে যে বাংলা বিহার বা উত্তরপ্রদেশ হবে না, বাংলাই থাকবে। চতুর্থ পংক্তিতে ‘ভীষণ’ শব্দটির ব্যবহার আছে। অনুব্রত মণ্ডল উগ্রভাবে এই ‘ভীষণ’ শব্দ ব্যবহার করেছিলেন। এখানে উগ্রতা নেই। এখানে লেখক বলতে চেয়েছেন লড়াইটা ‘কঠিন’ হবে। আক্ষরিক অর্থে সত্য এই কথা। কেননা যুদ্ধক্ষেত্রে একা এক নারী, অন্যদিকে প্রতিপক্ষ কয়েকজন।
‘আমার মাটি সইবে না/ ইউ পি বিহার হইবে না/ বাংলা আমার বাংলা রবে
ভীষণ রকম খেলা হবে।’
সপ্তম স্তবকে উত্তরপ্রদেশের হাসরাথের নারকীয় ঘটনার ইঙ্গিত আছে, যে ঘটনার জন্য যোগী সরকার দায়ী। তারপরে আছে করোনা বিতাড়নের জন্য মোদির থালা বাজানোর নিদান। সেই বাজনার রেশ ধরে লেখক বলেছেন যে বাংলার মাটিতেও রাজনৈতিক যুদ্ধের বাজনা বাজবে। এ স্তবকে ‘নতুন খেলার’ কথা বলা হয়েছে। ‘নতুন’ শব্দটি তাৎপর্যপূর্ণ এবং সার্থক। কেননা বিজেপির খেলার সঙ্গে টক্কর দিতে হলে প্রতিপক্ষকেও নতুন করে গুটি সাজাতে হবে, প্রশান্তকিশোরদের সাহায্য নিতেই হবে।
‘হাসরাথেতে বোনকে জ্বালাও/ মোদি বলেন থালা বাজাও/ এই মাটিতেও বাজনা হবে/ নতুন রকম খেলা হবে।’
অষ্টম স্তবকে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্যবৃদ্ধির কথা আছে, আছে রামনামের দোহাই দিয়ে ধর্মীয় বিভাজনের কথা। এখানে মমতাকে দেবী দুর্গার সঙ্গে চমৎকারভাবে তুলনা করা হয়েছে। যে রামের প্রতি গেরুয়া শিবিরের নকল ভক্তি, সেই রামের দেবী দুর্গা। তার মানে ইঙ্গিতটা দুর্গার অর্থাৎ মমতার বিজয়ের।
‘পেঁয়াজ আলু গ্যাসের দামে/ দেশকে ভাঙো রামের নামে/ রামের দেবী দুর্গা তবে/ বন্ধু জেনো খেলা হবে।’
নবম স্তবকে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের প্রসঙ্গ এসেছে। এই নির্বাচনে ১৮টি আসনে বিজেপি প্রার্থী জয়লাভ করেন।কিন্তু তাঁরা বাংলার জন্য কিছু করেন নি। তাই এবারের নির্বাচনে বিজেপি প্রার্থীদের পরাস্ত করতে হবে।
‘আঠারোটা এমপি নিয়ে/ বাংলাকে মোর ভুললে গিয়ে/ রির্টান তুমি আসবে কবে
বন্ধু সেদিন খেলা হবে।’
দশম স্তবকে বলা হয়েছে তৃণমূলের দলত্যাগীদের নিয়ে বিশেষ ফ্য়দা তুলতে পারবে না বিজেপি। শেষ পর্যন্ত তাকে হা-হুতাশ করতে হবে। তবে স্তবকটিতে ‘রাঁচি’ শব্দের প্রয়োগ যথার্থ হয় নি।
‘মুকুল শোভন সব্যসাচী/ বিজেপি আজ আস্ত রাঁচি/ দিলীপ কী ফের কাঁদবে তবে
বন্ধু সেদিন খেলা হবে।’
একাদশ ও দ্বাদশ স্তবকে নির্বাচনী যুদ্ধে জয়লাভের ইঙ্গিত দিয়ে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে চেয়েছেন লেখক।
‘সবুজ আবির খেলা হবে/ খেলা খেলা খেলা হবে/ বন্ধু এসো খেলা হবে
খেলা খেলা হবে/ মাঠেই আছি খেলা হবে/ খেলা খেলা খেলা হবে/ ভীষণ রকম খেলা হবে/ খেলা খেলা খেলা হবে/ সবুজ আবির খেলা হবে
বাংলাতে ভাই দিদিই রবে/ খেলা খেলা খেলা হবে।’
আটপৌরে ভাষায়, সরল সহজ প্রকাশভঙ্গিতে রচিত এই গানটিকে ‘রণসঙ্গীত’ বলা যায়। কিন্তু নজরুলের রণসঙ্গীতের সঙ্গে পার্থক্য আছে। গানটিতে কোথাও কোন উগ্রতা প্রকাশ পায় নি। আবেগের আতিশয্যও নেই। প্রত্যয় আছে। কিন্তু সেটা জোর করে চাপিয়ে দেওয়া হয় নি। প্রথম দশটি স্তবকে যে ঘটনাগুলির ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে, তারই সূত্র ধরে স্বতঃস্ফূর্তভাবে সেই প্রত্যয়ে উত্তরণ ঘটেছে। ‘খেলা খেলা খেলা হবে’—এই ধ্রুবপদ দর্শক-শ্রোতাকে উত্তেজিত, রোমাঞ্চিত করেছে। সুতরাং বলা যেতে পারে এবারের নির্বাচনে তৃণমূলের বিজয়ের অন্যতম হাতিয়ার এই গান বা স্লোগানটি।
‘খেলা হবে’। শব্দ দুটি কানে যেতেই কেউ কেউ বিরক্ত ও বিব্রত হয়েছিলেন। রাজনীতির খেলা বলতে তাঁরা শুধু মারামারি কাটাকাটিকে বুঝেছেন। তাই ভয়। কিন্তু খেলা তো লীলাখেলাও হয়। আবার ছেলেখেলাও হয়। রাজনীতিতে যে লীলাখেলা হয়, তার প্রমাণ তো আমাদের এক প্রাক্তন মন্ত্রী। শোভন চট্টোপাধ্যায়। স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর বিবাদ বাধল। তিনি বন্ধু বৈশাখীকে নিয়ে আলাদা থাকতে লাগলেন। কত লোকে কত কথা বলতে লাগল। কিন্তু শোভন বললেন, ‘দুঃখের বরষায় চক্ষের জল যেই নামল / আমার দুয়ার পথে বন্ধুর রথ সেই থামল। ’ এরকম শোভনবাবু বহু আছেন। তাঁরা রাজনীতির লোক, আবার লীলাখেলারও লোক। আর ছেলেখেলা? তারও অজস্র উদাহরণ পাবেন। সংসদে বা বিধানসভায় যে সব তর্ক-বিতর্ক হয়, উক্তি-কটূক্তি ছোঁড়া হয়, তাকে বাচ্চারই ছেলেখেলা বলে। ছেলেদের খেলা ছেলেখেলা নয় মশাই, বয়স্কদের বালসুলভ আচরণই ছেলেখেলা। মহামতী শেক্সপিয়র বলেছেন পৃথিবীটা একটা রঙ্গমঞ্চ। আমরা মানুষেরা নট-নটী। কিছুদিন খেলা বা অভিনয় করে কালের নিয়মে আমরা বিদায় নিই। কেউ সংসারখেলা করেন। সংসারখেলার লোকই বেশি। সংসারখেলার মধ্যেও আবার নানারকম খেলা থাকে। যেমন প্রেমের খেলা, প্রীতির খেলা, রিরংসার খেলা, বিবাদখেলা। সংসারের বাইরে যাঁরা বেরিয়ে আসতে পারেন তাঁরা সাহিত্যের খেলা, রাজনীতির খেলা, বিজ্ঞানের খেলা, অর্থনীতির খেলা, অভিনয়ের খেলা নিয়ে মত্ত থাকেন।
তাহলে রাজনীতির খেলাটা দোষের কেন? কালের নিয়মে রাজনীতি আর সেবা-দ্রব্য নেই, সেবা-পণ্য হয়ে উঠেছে। তার মানে রাজনীতি একটা ব্যবসা। তুমি যদি আমাকে নেতা হতে সাহায্য করো, তাহলে বিনিময়ে তুমিও কিছু পাবে। রাজনীতি আজ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মুনাফা অর্জনের হাতিয়ার। দেখছেন না, বিয়ের বাজারে আজ রাজনীতিওয়ালাদের কত কদর। এটা কী আজ থেকে পঞ্চাশ বছর আগে ছিল? মানুষ যাতে পণ্য কেনে তার জন্য বিজ্ঞাপন দিতে হয়। যতই শঙ্খ ঘোষের মতো কবিরা বলুন না ‘মুখ ঢেকে যায় বিজ্ঞাপনে’ , তবু আজকের দিনে বিজ্ঞাপন ছাড়া বাণিজ্য অচল। রাজনীতিতেও দরকার বিজ্ঞাপনের খেলা। রাজনৈতিক দল বা সেই দলের ভাবমূর্তি তৈরি করতে হয়, লোককে খাওয়াতে হয়, জনপ্রিয়তা তৈরি করতে হয় --যাতে ভোটের বাক্স ভর্তি হয়। মশায়, রাজনৈতিক সাইবারনেটিকসের নাম কী আপনি শোনেন নি? এর মূলে আছে স্বয়ংক্রিয় নিয়ন্ত্রিত যোগাযোগ ব্যবস্থা। দেখছেন না সব রাজনৈতিক দল এখন আইটি সেলের সাহায্য নিচ্ছে ! সাহায্য নিচ্ছে প্রশান্তকিশোরের মতো ভোটকৌশলীর! এক সাক্ষাৎকারে অভিষেক ব্যানার্জী বলেছিলেন যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে খেলার কথা। ঠিকই বলেছিলেন তিনি। বিজেপি বলুন. তৃণমূল বলুন. কংগ্রেস বলুন, সিপিএম বলুন,--সবাই প্রাণপণে যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে খেলার চেষ্টা করছেন।
রাজনীতির খেলা আবার নানারকম। স্বৈরতন্ত্রের খেলা, গণতন্ত্রের খেলা, সাম্রাজ্যবাদের খেলা, সমাজতন্ত্রের খেলা। খেলতে খেলতে এ ওকে লেঙ্গি মারছেন, সুগারকোটেড কুইনিন খাওয়াচ্ছেন, বিশ্বসভায় দোষী সাব্যস্ত করছেন, নিজেকে ধোয়া তুলসীপাতা বলে প্রমাণ করার চেষ্টা করছেন। খেলা চলছেই। এই দেখুন, কোভিদ ১৯ এর উ্ৎস খোঁজার খেলা চলছে। চিন বলছে আমেরিকা তৈরি করছে এই ভাইরাস, আমেরিকা বলছে তৈরি করেছে চিন। মাঝখানে পেণ্ডুলামের মতো দুলছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। না ঘরকা, না ঘাটকা।
বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রের দেশ ভারতে রাজনীতির খেলারও বৈচিত্র্য আছে। নানা রঙের খেলা খেলছেন আমাদের নেতা ও নায়করা। যেমন বাবরি মসজিদ ভাঙার খেলা, রামমন্দির গড়ার খেলা, নোটবন্দির খেলা, জিএসটির খেলা, কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা রদ করার খেলা, পাকিস্তান ও চিনের সঙ্গে যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা, করোনা তাড়াবার জন্য গোমুত্র পানের খেলা ইত্যাদি ইত্যাদি।
তাহলে ‘খেলা হবে’ শুনেই আপনি আতঙ্কিত হয়ে উঠলেন কেন? এবার তো কেন্দ্রীয় বাহিনীর টাইট পাহারা ছিল। বলতে পারবেন না যে ছাপ্পা ভোটের খেলায় মমতার দল বিজয়ী হয়ে উঠেছে, যেমন আগে হয়েছিল। তাহলে তৃণমূলের খেলাটা কী ছিল? সেটা বলতে পারেন অনুব্রত মণ্ডল। মনে হয় প্যাণ্ডোরার বাক্সটা তাঁরই জিম্মায় আছে। না কি, বিজেপির বিভাজনের খেলায়, যোগী আদিত্যনাথের লাভ জিহাদের খেলায় এ রাজ্যের সংখ্যালঘুরা, নারীরা চুপচাপ ঘাসফুলে ছাপ দিয়ে এসেছেন? তার মানে, এবারের নির্বাচনে তৃণমূল যতটা খেলেছে, তার চেয়ে অনেক বেশি খেলেছে রাজ্যের মানুষ!
প্রধান প্রতিপক্ষ বিজেপি নির্বাচনের আগে যে সব খেলা খেলেছিলেন, সেগুলি তেমন কাজে লাগেনি। তাই নির্বাচনের পরে তাঁরা নতুন খেলায় মন দিয়েছেন। যেমন আইন-শৃঙ্খলার খেলা। ‘গেল গেল’ রব তোলার খেলা।প্রকৃতিও মানুষের সঙ্গে খেলে। যেমন ইয়াস খেলল, কয়েকটা জেলা খেয়ে ফেলল খেলার ছলে। এর পরে বিজেপি আবার তৃণমূলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির খেলা খেলবে। এখন দেখা যাক, তৃণমূল নতুন কোন খেলা বেছে নেয়।
dmajumdar2010@yahoo.in
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct