এহসানুল হক, হিঙ্গলগঞ্জ: হিঙ্গলগঞ্জ গৌড়েশ্বর নদীর বাঁধ ভাঙা জলে ভেসে যাওয়ার আশঙ্কায় বাঁশের উপরে মাচা তৈরি করে খাট পেতে দিনযাপন করছে একটি পরিবার। ইয়াস ঝড়ের পরে হিঙ্গলগঞ্জ মামুদপুর, হিঙ্গলগঞ্জ সহ বিভিন্ন এলাকা নদীর বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে ।প্রত্যেকদিন জোয়ারের জলে পুরো গ্রাম প্লাবিত হচ্ছে। অসহায় অবস্থার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে হিঙ্গলগঞ্জের মানুষ। এদিন হিঙ্গলগঞ্জ পঞ্চায়েতে এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, হু হু করে জল ডুকছে গ্রামে। কয়েক মিনিটের মধ্যেই হাটু জলে পরিণত হল। কারো মাটির বাড়ি ধসে গিয়েছে, কারো জল উঠেছে বাড়ির মধ্যেই। রান্না খাওয়াও বন্ধ, যেটুকু ত্রান থেকে পাওয়া যায় সেইটুকুই তাদের সম্বল। এমনই পরিস্থিতির মধ্যে দিন কাটছে তাদের। এদিন এলাকার বাসিন্দারা জানান, সেখানে জীবিকা বলতে কারো মাছের ভেড়িতে কাজ, নয়তো চাষবাস। হিঙ্গলগঞ্জ এর বাসিন্দা সুকুমার মাইতি, তপন মন্ডল বলেন, বারবার কংক্রিটের বাঁধ নির্মাণের আবেদন জানিয়ে কোন লাভ হয়নি ।মাঝেমধ্যে মাটির বাঁধে ধস নামে। তখন কোনমতেই বাদে একটু মাটি দিয়ে চলে যায় প্রশাসন। তা দেখিয়েই কোটি কোটি টাকা তুলে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন। নেতারাও এই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত বলে তারা জানান। তারা বলেন, আসলে বাঁধভাঙ্গা সরকারি টাকা আসলে সেই টাকায় কোনরকমে বাঁধে মাটি দিয়ে,বাকি টাকা নিজেদের পকেট ভরবে।
এদিন হিঙ্গলগঞ্জের বিধায়ক দেবেশ মন্ডল বলেন, অনেক জায়গাতেই আমরা বাঁধ তৈরি করেছি। কিন্তু জমি জটের কারণে সব জায়গায় কংক্রিটের বাঁধ নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি। এছাড়াও নদীর প্রচণ্ড চাপে বাঁধ ছাপিয়ে জল এসেছে এলাকায়। এলাকায় দ্রুত বাঁধ মেরামত করা যায় সেই চেষ্টায় চলছে। সকাল থেকেই জলে ডোবা বাড়ির সামনেই মুখ ভার করে বসেছিল তনুশ্রীর পরিবার। বেলা ইতেই দুই ভাই-বোনকে মামার বাড়িতে পাঠিয়ে দেন তনুশ্রী। তার কথায় যেভাবে জল বাড়ছে তাতে এরপর কি হবে জানিনা। তার উপর কাল রাত থেকে খাওয়া-দাওয়া নেই। ঘরে জল হাঁটু সমান তাই উপরে বাঁশের মাচা করে দিনযাপন করছে আমরা। আম্পানে তেমন কিছু ক্ষতি হয়নি ।জল আসেনি, কিন্তু এবার যে জলে ভাসতে হবে ভাবতে পারেননি।
গৌড়েশ্বর বাঁধ থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে হিঙ্গলগঞ্জ এর বাসিন্দা সঞ্জয় বলেন, ঘরের চালটা শক্ত করে বেঁধে ঘরে ছিলেন, কিন্তু ঝড়ের পরেরদিন সকালবেলায় গৌড়েশ্বর নদীর উত্তাল হয়ে ভাসিয়ে নিয়ে গিয়েছে ভিটেমাটি, জল বেড়েছে ক্রমাগত। আমরা চাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যে ত্রাণ আমরা যেন সমপরিমানে ভাগ পাই।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct