আপনজন ডেস্ক: আমফানের ঝড় থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার আগাম সতর্কতা নিয়েচিল রাজ্য সরকার। তা সত্ত্বেও মারাত্মক ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের তাণ্ডব থেকে রক্ষা পায়নি বাংলা। ওড়িশা থেকে অমিুখ সরে গিয়ে ভয়ঙ্করভাবে আছড়ে পড়ে বাংলার উপকূলবর্তী অঞ্চলে। ফলে দিঘা সমুদ্রে যেমন কয়েক তলা বাড়ি সমান ঢেউ তেমনি বিভিন্ন জায়গায় জলোচ্ছ্বাসের তোড়ে ভেঙে গিয়েচে বাঁধ্ ফলে রাজ্যের এক বিস্তীর্ণ অঞ্চল এখন জলের তলায়। মুখ্যমন্ত্রী জানান, ৭২ ঘণ্টার মধ্যে রিপোর্ট পেয়ে জুম্মাবার অর্ঘাৎ শুক্রবার ইয়াস তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকাকা হেলিকপ্টারে পরিদর্মন করবেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ইয়াসের ক্ষতির মুখে কমপক্ষে ১ কোটি মানুষ। আর বাঁধ ভেঙেছে ১৩৪টি। প্রবল জলোচ্ছ্বাসের জেরে ১৪টি জেলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সবথেকে প্রভাব পড়েছে পূর্ব মেদিনীপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায়। শঙ্করপুর, দিঘা, মন্দারমণি, সন্দেশখালি, নামখানা, পাথরপ্রতিমা, বাসন্তী, ক্যানিং ১–২, বজবজ, দিঘা, শংকরপুর তাজপুর, রামনগর, কাঁথি, নন্দীগ্রাম, সুতাহাটা, দেশপ্রাণ, কোলাঘাট, শ্যামপুর, কালীঘাট, চেতলা রাসবিহারী–সহ গঙ্গার সামনের বহু এলাকা জলে প্লাবিত হয়েছে। দিঘায় জলোচ্ছ্বাসে পুরো শহরটাই জলমগ্ন। আর বাঁধ ভেঙে যাওয়া একের পর ্ক গ্রম জলমহ্ন হয়ে পড়ায় তাদের ভরসা স্থল এখন ত্রাণ শিবির।
সারারাত জেগে থেকে জেলায় জেলায় নির্দেশ পাঠিয়ে মানুষের জীবন রক্ষার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি নিজেও রাত জেগে নজরদারি চালাবেন। তবে, স্বস্তির কথা আপাত ইয়াসের কবলে পড়ে মাত্র একজনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। তাও আবার তিনি মাছ ধরতে জাল ফেলতে গিয়ে ডুবে যান।
বুধবার সকালে সাংবাদিক সম্মেলন করে পরিস্থিতির কথা জানান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, ‘মোট ১৫ লক্ষ ৪ হাজার ৫০৬ জনকে সরানো হয়েছিল। তা সত্ত্বেও প্রায় এক কোটি মানুষ ক্ষতির মুখে পড়েছেন। তিন লক্ষ বাড়ির ক্ষতি হয়েছে। ১৩৪ বাঁধ ভেঙেছে। কৃষির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। মাছেরও ক্ষতি হয়েছে। ত্রাণ শিবিরগুলিতে ১০ লক্ষ ত্রিপল পাঠানো হয়েছে। ১০ কোটি চাল ও শুকনো খাবার পাঠানো হয়েছে।’
এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘বন্যা পরবর্তী পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার দিকে নজর দিতে হবে। পরিস্রুত পানীয় জলের সরবরাহ করতে হবে। পানীয় জল থেকে কেউ যেন বঞ্চিত না হন। যাতে দূষিত জল খেয়ে কেউ অসুস্থ না হয়ে পড়েন।’ দূষিত জল পান করে ত্রাণ শিবিরে কেউ যাতে অসুস্থ না হয় সেদিকেও লক্ষ্য রাখার নির্দেশ দেন।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবার দুর্যোগের মধ্যেই নবান্নে বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করেন। বন্যা পরিস্থিতি কী অবস্থায় তা নিয়ে ফোন করেন সুন্দরবন মন্ত্রী বঙ্কিম হাজরাকে। শুক্রবার হেলিকপ্টারে প্রথমে উত্তর ২৪ পরগণার হিঙ্গলগঞ্জ এলাকা পরিদর্শন করবেন মুখ্যমন্ত্রী৷ সেখান থেকে তিনি যাবেন দক্ষিণ ২৪ পরগণার সাগরে ৷ পরে তিনি যাবেন পূর্ব মেদিনীপুরের দিঘায়৷ আকাশপথে ঘূর্ণিঝড় এবং বৃষ্টিতে প্লাবিত এলাকাগুলি পরিদর্শন করবেন মু্খ্যমন্ত্রী৷ সন্দেশখালি, সাগর এবং দিঘা— তিন জায়গাতে প্রশাসনিক পর্যালোচনা বৈঠকও করবেন ।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct