জয়প্রকাশ কুইরি, পুরুলিয়া: অতিপ্রাচীন তথা বছরের পর বছর ধরে চলে আশা পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়ে বুদ্ধ পূর্ণিমার দিন বন্য প্রাণী শিকার করে ঘটা উৎসব পালন করা হলেও এবছর কোনো বন্য প্রাণী শিকার করা যাবে না। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে এবারে শিকার উৎসবে শিকার বন্ধ করতে তোড়জোড় পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন। এবছর শিকার উৎসবে যাতে জঙ্গলের কোন বন্য প্রাণী হত্যা করা না হয় সে জন্য বনদপ্তর, ব্লক প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে প্রচার চালানো হচ্ছে। যদিও পাহাড়ের বন্য প্রাণী শিকার বন্ধের বিষয় নিয়ে প্রথমেই পুরুলিয়া ডিএফও দেবাশীষ শর্মা একটি বৈঠকের মাধ্যমে সাংবাদিক সম্মেলন করেন।
তারপর থেকেই অযোধ্যা পাহাড় সহ বনাঞ্চলের প্রায় সবকটা যাতায়াতের রাস্তা গুলিতে বনদপ্তরের পক্ষ থেকে শুরু হয়েছে তল্লাশি অভিযান। এবিষয়ে বুধবার বাঘমুন্ডি ব্লকের মিটিং হলে শিকার উৎসবে বন্য প্রাণী শিকার বন্ধ রুখতে একটি জরুরি বৈঠক করা হয়েছে। এই বৈঠকে ছিলেন পুরুলিয়া এডিএফও অভিজিৎ চৌধুরী, বাঘমুন্ডি ব্লকের বিডিও দেবরাজ ঘোষ ও জয়েন্ট বিডিও সুভাষ কুমার মন্ডল, বাঘমুন্ডি থানার ওসি মুকুল কর্মকার, মাঠা ও অযোধ্যা বনাঞ্চলের রেঞ্জার সহ অন্যান আধিকারিকেরা। অন্যদিকে পাহাড়ে বন্য প্রাণী শিকার বন্ধ করতে শুধু প্রশাসনই নয় তার সাথে সাথে ভারত জাকাত মাঝি পরগনা মহল নামে একটি সংঘঠনও বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচারের উদ্যোগ নিয়ে শিকার বন্ধ করতে পথে নেমেছেন। পাশপাশি এই সংগঠনের তরফ থেকে তিনটি ভাষাতে লেখা একটি বিজ্ঞপ্তি আবেদন জানানো হয়েছে বলে সূত্রে খবর। সংগঠনের পক্ষে শ্যাম সুন্দর মান্ডির জানান, প্রথমত প্রাণী হত্যা করা একটি আইনত অপরাধ আর দ্বিতীয়ত এই করোনার ভয়াবহ পরিস্থিতি ও লকডাউন পিরিয়ড। এই সময় যাতে শিকার উৎসবে কেউ অংশগ্রহণ না করে তারই প্রচারে নেমেছে এই সংগঠন।
সরকারি স্বাস্থ্যবিধি মেনে শুধুমাত্র শিকার উৎসবের পুজোর আচার আচরণ হবে তবে উৎসব বলে কিছু থাকবে না। আর এটা নিয়ে বিভিন্ন স্তরে সংগঠনের পক্ষ থেকে আলোচনা করা হচ্ছে। বাঘমুন্ডি বনদপ্তরের আধিকারিক আলমগির হক বলেন, আমাদের জেলা থেকে ব্লক পর্যন্ত এখন শিকার উৎসবে শিকার রুখতে বিশেষ জরুরী বৈঠক চলছে। আর যাতে কেউ আদেশ অমান্য করতে না পারে তার দিকে আমাদের বিশেষ নজরদারি রয়েছে। শিকার উৎসব পালন হবে পরিস্থিতির স্বাস্থ্য বিধি মেনেই। তবে শিকার নয়। শুধুমাত্র শিকার উৎসবের পূজো মাত্রই হবে। বাঘমুন্ডির অযোধ্যা পাহাড় সহ প্রত্যেক গ্রামে আমাদের পক্ষ থেকে শিকার উৎসব ঠেকাতে প্রচারে জোর দেওয়া হয়েছে। এতে যৌথ বন সুরক্ষা কমিটির সদস্যদেরও শামিল করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct