আপনজন ডেস্ক: টানা দশম দিনের মতো অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় নিরীহ ফিলিস্তিনিদের ওপর বোমাবর্ষণ অব্যাহত রেখেছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী। তাদের হামলায় এ পর্যন্ত ৬৩ শিশুসহ ২১৯ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। হানাদারদের বোমার আঘাতে ধ্বংস হয়ে গেছে গাজার অন্তত ৫০টি স্কুল, যার ফলে শিক্ষাজীবন হুমকিতে পড়েছে প্রায় ৪২ হাজার শিশুর। তবে সেখানকার প্রকৃত অবস্থা আরও ভয়াবহ।
ইসরায়েলি হামলায় প্রায় বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন দিন কাটছে গাজার ২০ লাখ অধিবাসীর। হাসপাতালগুলোতে পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ সরবরাহের অভাবে ঠিকঠাক চিকিৎসাসেবা দেয়াও সম্ভব হচ্ছে না। ভেঙে পড়েছে পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা। গাজার মেয়র ইয়াহিয়া আল-সারাজ বলেছেন, ইসরায়েলি হামলায় উপত্যকার রাস্তাঘাট, বিদ্যুৎ ও পানির লাইনের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ায় জরুরি পরিষেবা বন্ধ হয়ে গেছে। তিনি অভিযোগ করেছেন, ইসরায়েল ইচ্ছা করে ফিলিস্তিনিদের বাড়িঘরের পাশাপাশি, বিভিন্ন বাণিজ্যিক ভবন ও প্রধান প্রধান সড়ক ধ্বংস করে দিচ্ছে। সারাজ বলেন, আশপাশের অঞ্চলগুলোতে ইসরায়েলের ক্রমাগত বোমা হামলা এবং শ্রমিকরা কাজে পৌঁছাতে না পারার ফলে গাজার একমাত্র লবণ পৃথকীকরণ প্ল্যান্টটি বন্ধ রয়েছে। আর বিদ্যুতের অভাবে বাড়িঘরে জল সরবরাহও ব্যাহত হচ্ছে।
গাজায় বিদ্যুৎ সংকট নতুন কিছু নয়। তবে সাম্প্রতিক লড়াইয়ের কারণে সৃষ্ট জ্বালানি সংকট এবং ইসরায়েলে থেকে আসা ১০টি বৈদ্যুতিক লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সেই পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। সেখানে দিনে সবমিলিয়ে তিন-চার ঘণ্টাও বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। গাজার বিদ্যুৎ বিতরণ প্রতিষ্ঠানের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, শহরের ১০টি লাইনের ছয়টিই বন্ধ হয়ে গেছে।সীমান্তের কিছু এলাকা একেবারেই বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ক্রমাগত হামলার কারণে কর্মীরা সেগুলো সারাতে যেতেও পারছেন না।
রেড ক্রসের মহাপরিচালক রবার্ট মার্দিনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, গাজায় বসবাসকারী পরিবার ও আমাদের কর্মীরা বলছেন, তারা ভেঙে পড়ার মুহূর্তে পৌঁছে গেছেন। সেখানে মৌলিক সরবরাহ ও বিদ্যুতের মারাত্মক সংকট চলছে, যা ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় ডেকে আনছে। রাষ্ট্রসংঘের হিসাবে, গাজায় চরম জলসংকটের কারণে অন্তত ৪ লাখ ৮০ হাজার মানুষের জীবন ঝুঁকিতে পড়েছে। তাদের অনেকের কাছে জল পৌঁছাচ্ছে না বললেই চলে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct