কুতুবউদ্দিন মোল্লা, ক্যানিং: কোনরকম কাটাছেঁড়া নয়। না কোনো অপারেশনও নয়। আর অপারেশন না করেই গলা থেকে প্রায় বুকের কাছে চলে যাওয়া একটি ধারালো ব্লেড কে নিখঁত ভাবে বের করলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসকরা। একেবারে বলে যেতে পারে অসাধ্য সাধন করলেন মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসকরা।
ক্যানিং মহকুমা হাসপাতাল সূত্রে খবর, নামিয়া ঘরামি নামে ক্যানিংয়ের ইটখোলা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা থেকে এক দশ মাসের শিশু কে নিয়ে তার মা বাবা চলে আসে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে। রাতেই খেলতে খেলতে শিশুটি মুখে কিছু একটা দিয়ে দেয়। বাড়ির লোক কিছু বুঝে ওঠার আগেই শিশুটি তা গিলে ফেলে। মুখ থেকে হালকা রক্ত বের হতে থাকে। এই অবস্থায় অসুস্থ হয়ে পড়ে ওই দশ মাসের শিশু। ততক্ষনে গলা থেকে বুকের কাছাকাছি গিয়ে আটকে গেছে ধারালো ব্লেডের অর্ধেক অংশ।রবিবার রাতে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালের জরুরি বিভাগে তখন চিকিৎসারত অবস্থায় ছিলেন নাক কান গলা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বিকাশ সিংহ। অবস্থা বুঝে এরপর তিনি শিশুর বাবা মাকে দিয়ে একটি এক্স- রে করান।
এক্স -রে তো দেখা যায় শিশুর শ্বাসনালীর একেবারে শেষ প্রান্তের ডান দিকে আটকে রয়েছে একটি ধারালো ব্লেড। বেশ কিছুক্ষণ এইভাবে শরীরের মধ্যে ব্লেড আটকে থাকায় অসুস্থ হয়ে পড়েছিল দশ মাসের ওই শিশু। তড়িঘড়ি চিকিৎসক অপারেশন রুমে নিয়ে গিয়ে কোনরকম কাটাছেঁড়া না করে বের করে দেন ধারালো ব্লেডটি। বর্তমানে ঐ শিশুটি ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ বিষয়ে নাক-কান-গলার চিকিৎসক বিকাশ সিং বলেন, “এই কোভিড পরিস্থিতিতে ক্যানিং থেকে কলকাতা পাঠালে শিশুটি নিয়ে বাবা-মাকে অনেক ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হতো। ঝুঁকি নিয়ে এই কাজটি আমরা সম্পন্ন করলাম। বর্তমানে শিশুটি সুস্থ আছে। এসফাগোস্কপি ব্যবহার করে শিশুটির বুকের কাছ থেকে ধারালো ব্লেড টি বের করে আনা সম্ভব হয়েছে। যদি ব্লেডটির গোটা অংশই থাকতো তাহলে বের করা খুব কঠিন হয়ে পড়ত।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct