আপনজন ডেস্ক: করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে। কেবল এই একটি ‘কারণেই’ স্ত্রীর মরদেহ সৎকারের জন্য শ্মশান পর্যন্ত নিয়ে যেতে কোনো গাড়ির ব্যবস্থা করতে পারেননি স্বামী। শেষে কাপড়ে জড়ানো স্ত্রীর মৃতদেহ কাঁধে নিয়েই ৩ কিলোমিটার রাস্তা হেঁটে শ্মশানে পৌঁছেছেন ওই ব্যক্তি। রবিবার মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে তেলাঙ্গানার কামারেড্ডি এলাকায়। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া ওই নারীর নাম নাগলক্ষ্মী। কামারেড্ডি রেলস্টেশনের কাছে একটি ঝুপড়ি ঘরে থাকতেন তারা। পেশায় তারা ছিলেন ভিক্ষুক। গত কয়েক দিন ধরেই নাগলক্ষ্মী খুব অসুস্থ ছিলেন। নামমাত্র উপার্জনে স্ত্রীর চিকিৎসা করানো সম্ভব ছিল না। এমনকি স্ত্রী করোনায় আক্রান্ত ছিলেন কি না তা-ও জানা সম্ভব হয়নি। এর আগেই গত রোববার রেলস্টেশনের এলাকার মধ্যে নাগলক্ষ্মীর মৃত্যু হয়।
এই অবস্থায় শেষকৃত্যের জন্য রেল বিভাগের পক্ষ থেকে আড়াই হাজার টাকা দেওয়া হয় নাগলক্ষ্মীর স্বামীকে। কিন্তু সেই টাকা দিয়ে স্ত্রীর মৃতদেহ শ্মশানে নেওয়ার জন্য একটি গাড়িও ভাড়া করতে পারেননি তিনি। গুঞ্জন ছড়ায় যে, করোনা সংক্রমণের জন্যই নাগলক্ষ্মীর মৃত্যু হয়েছে। ফলে বাধ্য হয়েই স্ত্রীর মরদেহ কাঁধে তুলে নিয়ে হাঁটা শুরু করেন তিনি। পরে একটানা তিন কিলোমিটার হেঁটে শ্মশানে পৌঁছান ওই ব্যক্তি। হেঁটে শ্মশানে যাওয়ার সময়ও গাড়ির জন্য অনেকের কাছে মিনতি করেন তিনি। কিছু মানুষ টাকা ভিক্ষা দিলেও তিনি গাড়ি পাননি। একপর্যায়ে পায়ে হেঁটেই তিন কিলোমিটার দূরের ইন্দিরানগরের শ্মশানে পৌঁছান তিনি। বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্ত্রীর মরদেহ কাঁধে করে ওই ব্যক্তির হেঁটে যাওয়ার দৃশ্য ভাইরাল হয়।
অভাবের সংসার ছিল তাদের। গত কয়েক দিন ধরেই নাগলক্ষ্মী খুব অসুস্থ ছিলেন। করোনার চিকিৎসা করানো এই দম্পতির সামর্থের বাইরে ছিল। বাড়তি ওষুধের দামের কারণে তাও কিনতে পারেনি তার। পরীক্ষা করাও সম্ভব হয়নি। এমনিভাবে বিনা চিকিৎসায় রোববার নাগলক্ষ্মীর মৃত্যু হয়। মৃত্যুর সঙ্গে শেষ বিদায়টা আরও মর্মান্তিক হয়েছে। শেষ সময়ে স্বামী ছাড়া কারও সহানুভূতি না পেলেও ঘটনা ছড়িয়ে পড়ায় দেশবাসীর সহমর্মিতা পেয়েছেন।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct