আপনজন ডেস্ক: করোনা সংক্রমণের মধ্যে জীবিত রয়েছে মানবতা। যতই দেশজুড়ে সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর দাপাদাপি থাকুক না কেন, এখনও যে মানবতা মারা যায়নি তার ফের উদাহরণ সামনে এল বিহারের গয়ায়।
গয়ার প্রত্যন্ত এক গ্রামে করোনা আক্রান্ত হিন্দু বৃদ্ধার সৎকারে হিন্দু প্রতিবেশীরা এগিয়ে না এলেও মুসলিমরাই করোনা সংক্রমণকে দূরে ঠেরে রেখে তার সৎকারের ব্যবস্থা করলেন। জয় হল মানবতার।
দেশে করোনায় মৃত্যু স্রোতের ফলে কোথাও কোথাও শেষ যাত্রায় শামিল হওয়ার জন্যও মানুষ পাওয়া যাচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে বহিারের গয়ার ঘটনা সবাইকে উজ্জীবিত করতে পারে।
জানা গিয়েছে, গয়ার ইমামগঞ্জ ব্লকের রানিগঞ্জ পঞ্চায়েতের বাসিন্দা প্রভাবতী দেবী গত কয়েকদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। রানিগঞ্জেরই একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। দিন কয়েক আগে তাঁর স্বাস্থ্যের অত্যন্ত অবনতি হয়। তারপরেই তাঁর করোনা পরীক্ষা করা হয়। কিন্তু রিপোর্ট নেগেটিভ আসে।
এরপর প্রভাবতী দেবীকে নিয়ে বাড়ি ফেরার সময়ে গাড়িতেই মৃত্যু হয় তাঁর। এই ঘটনার পর তাঁর পরিজনেরা দেহ সেই গাড়িতেই রেখে বাড়ি চলে যান। এমনকী প্রতিবেশীরাও ঘরের দরজা বন্ধ করে দেন। যার জেরে দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত ওই গাড়িতেই পড়ে থাকে মৃতদেহ। এদিকে এই বিষয়টি জানতে পারেন মুসলিম সম্প্রদায়ের কিছু মানুষ। খবর পেয়ে তাঁরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান এবং শেষযাত্রার ব্যবস্থা করেন। এরপর তাঁদের সঙ্গে শামিল হন মৃতার স্বামী ও দুই ছেলে।
তারপর সবাই মিলে শবদেহ শ্মাশানে নিয়ে যান। মৃতার এক ছেলে জানাচ্ছেন, তাঁর মায়ের শেষকৃত্যে মহম্মদ রফিক, মহম্মদ কালামি, মহম্মদ লড্ডন এবং মহম্মদ শরিক অনেক সাহায্য করেছেন। এর জন্য তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতাও জানান মৃতার ছেলে।
এই বিষয়ে মহম্মদ রফিক বলেন, মানুষের দুর্দিনে তাঁর পাশে দাঁড়ানোটাই মানবতা। তাঁরা যা করেছেন সেটা তাঁদের কর্তব্য। একে অপরের সুখে দুঃখে শামিল হওয়া উচিত, কারণ সমাজে ভেদাভেদের কোনও স্থান নেই। সমাজে ধর্মীয় বিভাজনের চেষ্টা করা হলৌ করোনা কালে কিন্তু দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে ফাটলকে জুড়ে দিচ্ছে কিন্তু তা সাম্প্রদায়িক শক্তি কতদিন তাকে স্থায়ী রাখবে সেটাই প্রশ্নের।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct