আপনজন ডেস্ক: চিনের জিনঝিয়াং প্রদেশে উইঘুর মুসলিমদের উপর চিনা সরকারের অত্যাচারের কথা আজ বিশ্বজুড়ে নিন্দিত। তা সত্ত্বেও চিন সরাকারের কোনও হেলদোল নেই। ইদানিংকালে অবশ্য চিন সরকার কিছু কড়া নিয়ম শিথিল করেছে জিনঝিয়াং প্রদেশ্ েএকসময় সেখানে রোযা রাখা অপরাধের মধ্যে পড়লেও এখন ছাড় দেওয়অ হয়েছে। কিন্তু তবুও সেকানকার উইঘুর মুসলিমদের অততের চিনা সরকারের অত্যাচারের কথা ভুলতে পারছেন না। নির্বিচারে গ্রেফতার করে বন্দির রাখার স্মৃতি তাদেরকে আতঙাক সৃষ্টি করছে এখনও। তাই তারা রোযা রাখতে ভয় পাচ্ছেন।
যদিও উইঘুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলে (এক্সইউআর) পবিত্র রমযান মাসে রোযার উপর নিষেধাজ্ঞা কমেছে। তবে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের মতে, বাসিন্দারা রোযা থেকে বিরত থাকছেন। স্থানীয় সরকার কর্তৃপক্ষ জানায়, দীর্ঘকালীন “উগ্রপন্থী” হিসাবে চিহ্নিত হওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা। এবং আটক হওয়ার ভয়ে রোযা রাখছেন না। বহু বছর ধরে উইঘুর এবং অন্যান্য তুর্কি মুসলমানদের চিন সরকার ধর্মীয় নিপীড়ন এবং বিধিনিষেধের আওতায় রেখেছে। রমযান পালন করা পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা হয়েছিল এখানে। অনেক ক্ষেত্রে সরকারী কর্মচারী, শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকদেরও রোযা রাখতে নিষিদ্ধ করা হত। অঞ্চলটির কয়েকটি এলাকায় মসজিদে প্রবেশাধিকার কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয় এবং রেস্তোঁরাগুলি খোলা রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। উইঘুর অবসরপ্রাপ্তদের ও বয়ষ্কদের প্রায়শই রমযানের আগে রোযা না রাখার প্রতিজ্ঞা করতে বাধ্য করা হয়। তাদের বৃহত্তর সম্প্রদায়ের প্রতি উদাহরণ স্থাপনের জন্য নামাজ না পড়তে ও অন্যদেরও নামাজ থেকে বিরত থাকতে বলার জন্য দায়িত্বও দেওয়া হয়।
গত বছরের ২৩ শে এপ্রিল থেকে ২৩ মে ছিল রমযান। এ সময় সংবাদ মাধ্যম রেডিও ফ্রী এশিয়া জানতে পেরেছিল যে কাশগড় (চাইনিজ, কাশিয়ান ভাষায়) প্রদেশের মাকিত (মাইগাইতি) - জনসংখ্যার প্রায় ৮৮ শতাংশ মানুষ উইঘুর। তাদের সাথে কথা বলে জানাযায়, গতবছর এ এলাকার বাসিন্দাদের রোযা রাখছে এমন লোকের সন্ধান জানাতে বলা হয়। বাসিন্দাদের বলা হয়েছিল যে তারা রোযার জন্য শাস্তির মুখোমুখি হতে পারে। এমন কি তাদের একটি বৃহত্তর ইন্টার্নমেন্ট ক্যাম্পে প্রেরণ করার হুমকি ও দেওয়া হয়। ধারণা করা হয় এ ক্যাম্পে ২০১৭ সালের এপ্রিল থেকে ১.৮ মিলিয়ন উইঘুর এবং অন্যান্য মুসলিম সংখ্যালঘুদের আটকে রেখেছে চিন সরকার।
আরএফএ এ সময় কাশগরের পিজিওয়াত (জিয়াশি) কাউন্টির এক দলপ্রধানের সঙ্গেও কথা বলেছিল। তিনি জানান, তাঁর জনপদের বাসিন্দাদের রোজ ভোরে পতাকা উত্তোলন অনুষ্ঠান ও সন্ধ্যার রাজনৈতিক অধ্যয়নে উপস্থিত থাকা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। কারণ বাসিন্দাদের রোযা রাখতে বাধা দেওয়ার জন্য এটি দরকার ছিল।
এ বছরের রমযানে এই অঞ্চলের পরিস্থিতি তদন্তের জন্য, ১২ এপ্রিল থেকে ১২ মে পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করা হয়। আরএফএ ধর্মীয় বিষয় এবং ইউনাইটেড ফ্রন্টের অফিসারসহ সরকারী দফতরের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে। তবে তাদের মধ্যে অনেকেই পূর্ববর্তী বছরের মতো প্রশ্নের উত্তর দিতে অস্বীকার করে।
তবে, আরএফএ সম্প্রতি কাশগরের কোনা শেহের (শুফু) কাউন্টিতে তোককুযাক (তুওকেজাক) জনপদে এক পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছে, তিনি বলেছেন পর পর তিন বছর কঠোরভাবে নিষেধাজ্ঞার পরে ২০২০ সাল থেকে তাঁর অঞ্চলে রোযার উপর নিষেধাজ্ঞা কিছুটা শীথিল হয়েছে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct