আপনজন ডেস্ক: কেন্দ্রীয় সরকারের হাজারও টালবাহানার মধ্যে দিল্লি হাইকোর্ট দীর্ঘ দিন বন্ধ করে দেওয়া দিল্লির নিজামউদ্দিন তবলিগি মারকাজ সম্পূর্ণরূপে খুলে দেওয়ার নির্দেশ দিল। যদিও কেন্দ্রীয় সরকার ও দিল্লি সরকার বলেছিল ২০০ জনের তালিকা করে মাত্র ২০জনকে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হোক। আর একবারে পাঁচজনের বেশি ঢুকতে দেওয়া হবে না। কিন্তু আদালত পর্যবেক্ষণ করে দেখেছে মসজিদ বা অন্য কোনও ধর্মীয় স্থানে ভক্তদের প্রবেশের অনুমতিপ্রাপ্ত ভক্তদের নির্দিষ্ট তালিকা থাকতে পারে না। কারণ, মসজিদ বা অন্য ধর্মস্থানে কাউকে প্রবেশে বাদা দেওযা যেতে পারে না। যে কেউ প্রবেশ করতে পারে। সোমবার দিল্লি হাইকোর্ট তাই বলেছে কেন্দ্র ও দিল্লি পুলিশকে দিল্লি দিল্লি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (ডিডিএমএ)-এর নির্দেশিকা মেনে রমযান থেকেই বাংলাওয়ালি মসজিদ খুলে দিতে হবে।
গতবছরের ৩১ মার্চ করোনা সংক্রমণের কারণে নিজামুদ্দিন তবলিগি মার্কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। তার বিরুদ্ধে দিল্লি ওয়াকফ বোর্ড দিল্লি হাইকোর্টে গিয়ে অবিলম্বে নিজামুদ্দিন মার্কাজ খুলে দেওয়ার আর্জি জানিয়েছিল। গত ২৪ শে মার্চ, কেন্দ্র বলেছিল যে ওয়াকফ বোর্ড কর্তৃক নির্বাচিত ৫০ জন ব্যক্তিকে ‘শব-ই-বারাত; উপলক্ষে মসজিদে নামাজ পড়ার অনুমতি দেয়।
এরপর হাইকোর্ট নিজামুদ্দিন মার্কাজ খূলে দেওয়ার ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকার ও দিল্লি পুলিশের মতামত চেয়েছিল।
তা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে বলা হয় পুলিশ-যাচাই করা ২০০ ব্যক্তির তালিকা থেকে একসাথে কেবল ২০ জনকে প্রার্থনা করার জন্য প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে।
এ নিয়ে বিচারপতি মুক্ত গুপ্ত বলেন, এটি একটি উন্মুক্ত জায়গা। কোনও ধর্মীয় স্থানে ভক্তদের যাওয়ার সংখ্যা নির্দিষ্ট করে দেওয়া যায় না। বিচারপতি মুক্ত গুপ্ত পর্যবেক্ষণ করে দেখেছেন, কেউ মন্দির বা মসজিদ বা গির্জায় যেতে চাইলে নির্দিষ্ট করে ২০০ জনকে এক এক করে যেতে দেওয়া যেতে পারে না।
বিচারপতি আরও বলেন, ‘২০০-লোকের তালিকা গ্রহণযোগ্য নয়; এটা হতে পারে না। হ্যাঁ, আপনি মসজিদটির সঠিক এলাকা নির্দিষ্ট করে দিন। আর বলুন সামাজিক দূরত্বের নিয়ম মেনে কতজনকে অনুমতি দিতে চান। ধর্ম্থানে প্রবেশের জন্য কেউ নাম দিতে পারে না। কোনও ধর্মীয় স্থানের জন্য নাম জিজ্ঞাসা করা যায় না।
আদালত আরও বলেন, ধর্মপ্রাণ মানুষ মসজিদে আসেন, নামায পড়েন আর চলে যান।
এরপর সাামজিক দূরত্ব বিধি মেনে (ডিডিএমএ)-্এর গাইডলাইন অনুযায়ী নিজামুদ্দিন মার্কাজ খূলে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে, হজরত নিজামিুদ্দিন থানার এসএইচও হজরত নিজামউদ্দিন এবং মসজিদের অফিসাররা ও ওয়াকফ বোর্ডের সদস্য হিমাল আক্তার এবং আইনজীবী ওয়াজিহ শফিকের উপস্থিতিতে মসজিদের একটি যৌথ পরিদর্শন করবে।
এছাড়া, প্রয়োজনে সিসিটিভি বসিয়ে ভক্তরা নিয়ম মানছে কিনা তা দেখা যেতে পারে।
উল্লেখ্য, দিল্লি ওয়াকফ বোর্ড হাইকোর্টেকে জানিয়েছিল, আনলক -১ নির্দেশিকাটি কনটেন্ট জোনগুলির বাইরে ধর্মীয় স্থানগুলি খোলার অনুমতি দেওয়ার পরেও, দিল্লির মসজিদ বাংলাওয়ালি, মাদ্রাসা কাশিফ-উল-উলুম এবং সংযুক্ত ছাত্রাবাসের সমন্বিত মার্কাজ এখনও বন্ধ করে রাখা হয়েছে। হাইকোর্টের রায়ে তা মুক্ত হল।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct