আপনজন ডেস্ক: ইন্দোনেশিয়ায় ভূমি ধসে ও ঘুর্ণিঝড়ের কবলে পড়ে কমপক্ষে ৪৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া ইন্দোনেশিয়ার সীমান্তবর্তী প্রতিবেশী দেশ পূর্ব তিমুরে প্রবল বৃষ্টি, বন্যায় মৃতু্য়্যুর খবর পাওয়া গেছে। জাভা সাগরে সৃষ্ট ঘুর্ণিঝড়ের প্রভাবে এ দুর্যোগ দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছে ইন্দোনেশিয়ার আবহাওয়অ অধিদফতর।
রবিবার ইন্দোনেশিয়ার সবথেকে পূর্বে থাকা ফ্লোরেস দ্বীপে প্রথমে বন্যা ও পরে ভূমিধস দেখা দেয়। হতাহতের পাশাপাশি সেখানকার বাড়িঘরেরও ব্যাপক ক্ষতি সাধন হয়েছে। ভেঙ্গে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থাও।
খবরে দেশটির দুর্যোগ প্রশমন সংস্থার বরাত দিয়ে জানানো হয়, পূর্ব ফ্লোরেস এলাকায় ৪৪ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ৯ জন আহত হয়েছে। অনেকেই এখনও কাদার নিচে আটকা রয়েছেন। উদ্ধারকর্মীরা জানিয়েছেন, মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।
বৃষ্টি ও দমকা হাওয়ার কারণে তারা প্রত্যন্ত ও সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করতে পারছেন না। এই সপ্তাহজুড়ে চরম প্রতিকূল আবহাওয়া থাকবে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।
শনিবার মধ্যরাতের পর থেকে শুরু হয়েছে ঘুর্নিঝড়ের তাণ্ডব। ইন্দোনেশিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় দ্বীপ ফ্লোরেস এবং আদোনারা পড়েছে এই দুর্যোাগের কবলে। রোববার দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা বিএনপিবির মুখপাত্র রাদিত্য জাতি বলেন, ‘ফ্লোরেস দ্বীপের লামানেলে গ্রামে ২৩ জনের মৃত্যুর সংবাদ পাওয়া গেছে, ৫ জন নিখোঁজ আছেন। ওই গ্রামে বসবাসকারী ৪৯ টি পরিবারের সবগুলোই কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গ্রামের বাড়িগুলো জলোচ্ছ্বাসের জল আর কাদায় ডুবে গেছে।’
লামানেলের অধিবাসীদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনতে উদ্ধারকর্মীরা কাজ করছে বলে জানিয়েছেন রাদিত্য। আদোরানা দ্বিপে নিহত বা আহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
‘প্রবল বৃষ্টি, ঝড়ো বাতাস ও ঢেউয়ের কারণে আদোরানায় একটি সেতু ভেঙে পড়েছে। তবে এখন পর্যন্ত সেখান থেকে নিহত-আহত বা নিখোঁজের সংবাদ পাওয়া যায়নি।’
এদিকে ইন্দোনেশিয়ার প্রতিবেশী দেশ পূর্ব তিমুরের রাজধানী দিলির পার্শ্ববর্তী একটি এলাকায় বৈরি আবহাওয়া ও ভূমিধ্বসে ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে।
দেশটির নাগরিক সুরক্ষা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী জোয়াকুইম গুসমাও জানিয়েছেন ইতোমধ্যে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে দিয়েছেন দেশটির দমকল কর্মীরা।
তিনি বলেন, ‘উদ্ধার তৎপরতায় বয়স্ক ব্যক্তি, শিশু ও গর্ভবতী মহিলাদেরকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নেওয়াকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।’
তিনি আরো জানান, ইতোমধ্যে দেশের প্রেসিডেন্টের বাসভবনে বন্যার জল ঢুকে পড়েছে এবং দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে দেশের অধিকাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ আছে।
তবে খুব দ্রুত এই দুর্যোগ কাটার সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছে ইন্দোনেশিয়ার আবহাওয়া অধিদফতর। রোববার সর্বশেষ বুলেটিনে অধিদফতরের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘ইন্দোনেশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য নুসা টেংগারা ও পূর্ব তিমুরের উত্তর উপকূলীয় এলাকায় সৃষ্ট মৌসুমি ঘুর্ণিঝড়ের প্রভাবে এই দুর্যোগ দেখা দিয়েছে। ঘুর্ণিঝড়টি কখন ওই এলাকা থেকে সরবে, তা এখন বলা যাচ্ছে না।’
‘ঘুর্ণিঝড়টি দুর্বল হওয়ার কোনো লক্ষণও দেখা যাচ্ছে না। এ কারণে উপদ্রুত এলাকার অধিবাসীদের সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন ও দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার আহ্বান জানানো হচ্ছে।’
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct