আপনজন ডেস্ক: এ মাসের মাঝামাঝি নাগাদ শুরু হবে মুসলিমদের উপবাস রাখার ধর্মীয় রীতি রোযা। রোযা বা উপবাস রাখতে হলে ভোররাতে (সেহরি) খেতে হয় আর সন্ধ্যায় ইফতারের মাধ্যমে তা ভাঙতে হয়। অর্থাৎ দেখা যায় প্রায় ১৪-১৫ ঘণ্টা খালি পেটেই থাকতে হয়। তাই করোনা পরিস্থিতিতে রোযা রাখা নিয়ে এক সমীক্ষা করে ব্রিটিশ সংস্থা। ওই সমীক্ষা বলছে, করোনা ষংক্রমণের সময় রোযা রাখাটা অনেকটাই নিরাপদ।
এ ব্যাপারে ব্রিটিশ সংস্থার সমীক্ষা বলছে, গত বছর রমযানে রোযা পালন করা মুসলমানদের মধ্যে কোভিড-১৯ এ মৃত্যুর হার বাড়েনি। বৃহস্পতিবার পিয়ার রিভিউ জার্নাল অব গ্লোবাল হেলথে এই সমীক্ষার ফলাফল প্রকাশ হয়েছে।
এতে করোনাকালে রোযা রাখা নিয়ে সমীক্ষা রিপোর্ট বলছে, রমজান মাসে রোযা পালন করা ব্রিটিশ মুসলমানরা করোনা ভাইরাস সংক্রমণে মারা গেছেন এমন কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
সমীক্ষায় রিপোর্টে বলা হয়েছে, রমযান মাসে সারা দুনিয়ার মুসলিম ধর্মাবলম্বীরা সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত খাবার কিংবা পানীয় গ্রহণ থেকে বিরত থেকে রোযা পালন করে। ব্রিটেনে প্রায় ত্রিশ লাখ মুসলিম ধর্মাবলম্বীর বাস। এদের বেশিরভাগই দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূত। মহামারির সময়ে অন্যান্য নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীর মতো বহু মুসলমান কমিউনিটি নির্বিচারে আক্রান্ত হয়েছে। কিন্তু গবেষণায় দেখা গেছে, রমযান সংশ্লিষ্ট আচার-আচরণের সঙ্গে কোভিড-১৯ এ মৃত্যুর কোনও ক্ষতিকারক প্রভাব নেই।
যদিও গত বছর ব্রিটেনে অনেকেই আশঙ্কা করেছিলেন যে, রমযান মাসে আক্রান্তের পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে। তবে নতুন সমীক্ষায় বলা হয়েছে, ‘এসব দাবির কোনও দালিলিক ভিত্তি নেই। এর বদলে সমাজের জন্য ক্ষতিকর স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বৈষম্য নিরসনে সহায়ক রমযান। বিশেষ করে জীবন ধারণ এবং কর্মক্ষেত্রে থাকা বৈষম্য।’
করোনা ভাইরাসের মৃত্যুর হার নিয়ে করা তুলনামূলক এক সমীক্ষা রিপোর্টে াারও বলা হয়েছে, গত বছর ব্রিটেনে প্রথম দফার সংক্রমণ চূড়ায় পৌঁছানোর কয়েক দিনের মাথায় ২৩ এপ্রিল থেকে রোযাশুরু হয়। দেশজুড়ে চলা লকডাউনের কারণে এই মাসের সাধারণ উৎসব এবং মসজিদে নিয়মিত প্রার্থনা বাতিল করা হয়। ওই সময়ে অন্তত ২০ শতাংশ মুসলিম অধ্যুষিত বহু এলাকায় মৃত্যুর হার বিশ্লেষণ করে দেখেছেন গবেষকরা। তারা দেখেছেন রমযানে মৃত্যুর পরিমাণ ধীরে ধীরে কমে গেছে। রমযানের পরেও অব্যাহত থাকে এই প্রবণতা। তাই রমযান মাসে রোযা রাখায় করোনা সঙক্রমণের হার কমার পক্ষেই সওয়াল করেছে ওই ব্রিটিশ সমীক্ষা রিপোর্ট।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct