সঞ্জীব মল্লিক, বাঁকুড়া: প্রতিবার ভোট এলে মেলে ঝুড়ি ঝুড়ি প্রতিশ্রুতি। কিন্তু ভোট ফুরিয়ে গেলে আর দেখা মেলে না কারোর। ফলে সোনামুখী পৌরশহরের তাঁত শিল্পীদের করুণ অবস্থা দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে। বাঁকুড়া জেলা সোনামুখী পৌর শহরের তাঁত শিল্প জগৎজোড়া খ্যাতি রয়েছে বিশেষ করে সিল্ক শাড়ি থ্রিডি শাড়ি শুধুমাত্র এরাজ্যে নয় বিদেশে রফতানি হয় সোনামুখীর তাঁতিদের হাতে তৈরি শাড়ি।
তবে বর্তমান করোনাময় পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়ে বিদেশে চাহিদা অনেকটাই কমেছে।
পাশাপাশি দেশের বাজারেও বিক্রি অনেকটাই কমেছে এই শাড়ির। যার কারণে চরম আর্থিক সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে সোনামুখীর প্রায় আড়াই হাজার তাঁত শিল্পীদের।
কিন্তু তারপরেও রাজ্য সরকারের উদ্যোগে তাদের শিল্পের উন্নতির ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি বলেও অভিযোগ। তবে প্রতিবার ভোট এলে মেলে ঝুড়ি ঝুড়ি প্রতিশ্রুতি কিন্তু ভোট পেরিয়ে গেলে আর কারো দেখা মেলে না। তাই এই মুহূর্তে তারা তাকিয়ে রয়েছেন কবে সরকার তাদের এই শিল্পের উন্নতির দিকে নজর দেবে।
তার উপর হ্যান্ডলুম শাড়ি বাজারে আশায় তাদের তৈরি শাড়ির চাহিদা কমেছে ফলে আরও সমস্যায় পড়তে হচ্ছে তাদের। তার উপর বর্তমান প্রজন্ম এই শিল্পের প্রতি ক্রমশই আগ্রহ হারাচ্ছে অনেকে আবার তাঁত শিল্পের কাজ ছেড়ে বিদেশে দুটো পয়সা রোজগারের আশায় পাড়ি দিচ্ছেন।
নন্দরানী বৈদ্যিরাজ নামে এক মহিলা শিল্পী বলেন , আমি যবে থেকে শ্বশুর বাড়িতে এসেছি তবে থেকেই এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত রয়েছি একটা সময় রোজগার ভালো হলেও বর্তমানে আর সেভাবে রোজগার হচ্ছে না। ফলে দারুণ আর্থিক সংকটের মধ্য দিয়ে আমাদের সময় কাটাতে হচ্ছে। নির্মল রুদ্র নামে অপর এক তাঁতশিল্পি বলেন, সরকার যদি আমাদের এই উৎপাদিত শাড়ি গুলিকে বিক্রির সুবন্দোবস্ত করতো তাহলে খুবই উপকৃত হতো।
পাশাপাশি তিনি বলেন মাঝেমধ্যে সরকার আমাদের যে যন্ত্রপাতি দিচ্ছে তা কাজ হচ্ছে না তাই সেগুলিকে অল্প দামে আমাদের বিক্রি করে দিতে হচ্ছে।
সরকারি অবহেলায় সোনামুখী পৌরশহরের প্রাচীন ঐতিহ্যমণ্ডিত তাঁত শিল্প ধ্বংসের মুখে যেতে বসেছে কবে সরকারের নজর পড়বে কবে আবার আগের মত ঘুরে দাঁড়াবে এই শিল্প সেই আশাতেই দিন গুনছেন সোনামুখীর তাঁত শিল্পীরা ।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct