আপনজন ডেস্ক: চিনের জিনঝিয়াং প্রদেশে উইঘুর মুসলিমদের উপর অত্যাচারের কথা নতুন নয়। চিনা বাহিনী বহু উইঘুর মুসলিমদের সন্তানদের তুলে নিয়ে গিযে গুম করে দিচ্ছে বলে এবার অভিযোগ উঠল। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে গত বুধবার উইঘুর মায়েদের একটি দল তাদের নিখোঁজ শিশুদের ছবি সম্বলিত পোস্টার নিয়ে তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় রাষ্ট্রসংঘের ভবনের পাশে অবস্থান নেন। তারা বলেন, ২০১৭ সালে চিন সরকারের দ্বারা পরিবার থেকে পৃথক হয়েছিলেন। তারা তাদের সন্তানদের ফিরে পেতে চান।
তারা বলেন, তুর্কি কর্মকর্তারা তাদের সাথে বৈঠকে সম্মতি না দেওয়া পর্যন্ত তারা সেখানে অপেক্ষা করবেন - তারা চায় যে দেশের নেতারা তাদের বাচ্চাদের সন্ধানে সহায়তা করার জন্য চীনকে চাপ দিক। চিনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এই সপ্তাহে তুর্কি কর্মকর্তাদের সাথে দেখা করছেন বলে জানা যায়।
৮ ই মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবসে ইস্তাম্বুল থেকে পায়ে হেঁটে রাজধানী আঙ্কারায় যাত্রা শুরু করা এই মায়েরা। প্রায় দু’সপ্তাহ হাঁটেন তারা।
চিন থেকে তুরস্কে আশ্রয় নিয়েছেন এই সম্প্রদায়ের প্রায় ৫০ হাজার মানুষ। কয়েকশ উইঘুর পরিবার ছেলেমেয়েদের নিশ্চিত ভবিষ্যতের আশায় চীন ছেড়ে তুরস্ক চলে এসেছিলেন কয়েক বছর আগে।
বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তুরস্ক থেকে চিনে ফিরেছেন পুরুষেরা। তারা না-ফেরায় তুরস্কের পরিবারগুলিতে প্রধান রোজগেরে মানুষটির অভাব দেখা দিয়েছে। চরম সঙ্কটে বাচ্চাদের নিয়ে দিন কাটাচ্ছে মা।
আর যে পরিবারের মা-বাবা দু’জনেই চিনে ফিরে গিয়েছিলেন, সেখানকার পরিস্থিতি সব থেকে ভয়ঙ্কর। অভিভাবকহীন সন্তানরা ‘অনাথ’ হয়ে আশ্রয় নিয়েছে ইস্তানবুলের প্রান্তে একমাত্র উইঘুর স্কুলে। স্কুলের শিক্ষকেরাই তাদের দেখভাল করছেন।
জিনজিয়াং প্রদেশে কাজ করা মানবাধিকার কর্মীদের দাবি, সেখানকার উইঘুর বাচ্চারাও বেড়ে উঠছে অভিভাবকহীন হয়ে। ‘হিউম্যান রাইটস ওয়াচ’ নামের এক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা সেপ্টেম্বরে জানিয়েছিল, এই সব অভিভাবকহীন শিশুর বেজিং-নিয়ন্ত্রিত অনাথআশ্রমে স্থান হয়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তাদের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয় না আত্মীয়স্বজনকে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct