নাজিম আক্তার, হরিশ্চন্দ্রপুর: মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়ার ট্যাবের টাকা নয়ছয় করার অভিযোগ উঠল হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার তালবাংরুয়া হাই-মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক খায়রুল আলমের বিরুদ্ধে। এর আগে ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে কন্যাশ্রী থেকে সবুজ সাথী মিড ডে মিল এমনকি ছাত্র ভর্তির টাকা নিয়েও প্রচুর দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। তবু কেন মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট দপ্তর গুলি কেন কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না এই নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে এলাকায়। এর আগে ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ভুয়া তালিকা তৈরি করে বিদ্যালয় বহির্ভূত ছাত্রীদের পয়সার বিনিময়ে কন্যাশ্রীর টাকা পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ ছিল। তাছাড়া সবুজ সাথী সাইকেল বাইরে বিক্রি করে দেওয়া থেকে শুরু করে মিড ডে মিলের সামগ্রীও বাইরে বিক্রি করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও বিদ্যালয়ের নিজের হাতে থাকা ছাত্র ভর্তির প্রায় ১০ লাখ টাকা এখনো পর্যন্ত তিনি নিজের পকেটের রেখেছেন। এই নিয়ে কোনো দীর্ঘদিন যাবৎ হিসাব পেশ করছেন না বলে বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষক থেকে শুরু করে এলাকার অভিভাবকদের অভিযোগ। এ নিয়ে তারা হরিশ্চন্দ্রপুর থানা সম্প্রতি ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে পিটিশন দাখিল করেছেন। সম্প্রতি বিদ্যালয় পশ্চিমবঙ্গ সরকারের দেওয়া দ্বাদশ শ্রেণির জন্য ট্যাবের টাকা ঢুকে ছিল সেই টাকা নিয়ে দুর্নীতি করেছেন। ওই টাকা থেকে তিনি নিজের বিবাহিত মেয়ে এবং নাতনির নামেও টাকা টান্সফার করেছেন অন্য কোন ছাত্রীর রেজিস্ট্রেশন নাম্বার দাখিল করে।
এলাকার বাসিন্দা তথা অভিভাবক তজিবুর রহমান জানান বর্তমানে স্কুলে রাজ্য সরকারের বরাদ্দ করা দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের জন্য ট্যাব কেনার টাকা এসেছিল।কিন্তু ট্যাব প্রদানের তালিকাতে দেখা যাচ্ছে ওই হাই মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক খায়রুল আলম নিজের বিবাহিত মেয়ে এবং নাতনির নামে এলাকারই অন্যকোন প্রকৃত ছাত্রীর উচ্চমাধ্যমিকের রেজিস্ট্রেশন নাম্বার বসিয়ে তার মেয়ে এবং নাতনির নামে ট্যাবের টাকা একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের ইংলিশ বাজার শাখা ট্রানস্ফার করেছেন। এর সমস্ত প্রমাণ্য নথিপত্র আমরা পেয়েছি। বর্তমানে তিনি বিদ্যালয়ের নবম দশম এবং একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির খাতা বাড়িতে নিয়ে গিয়ে রেখে দিয়েছেন।এর আগে কন্যাশ্রী বিতরণের ক্ষেত্র তিনি নিজের জন্য ১৫ হাজার রেখে ১০ হাজার বিদ্যালয়ের বাইরের মেয়েদের দিচ্ছেন। সাইকেল নিয়েও ঘোটালা করেছেন তিনি।”
বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের অভিযোগ প্রধান শিক্ষক আমাদেরকে না জানিয়ে মিড-ডে-মিল নিজের মতো করে বিলি করছেন। অধিকাংশ ছাত্রছাত্রীই জানতে পারছে না। তারপর তিনি বাকি সামগ্রী চুপচাপ বাজারে বিক্রি করে দিচ্ছেন। কন্যাশ্রী থেকে সবুজসাথী এমনকি বর্তমানে ট্যাবের টাকা নিয়েও তিনি আমাদের বঞ্চিত করছেন।
এদিকে তৃণমূল সংখ্যালঘু সেলের জেলা সভাপতি মুশারফ হোসেন জানান, মাদ্রাসায় সরকারি প্রকল্পের কারচুপি মেনে নেওয়া যায় না। দোষী প্রধানশিক্ষকের শাস্তি দাবি করছি।
এই প্রসঙ্গে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খায়রুল আলম জানান বিদ্যালয়ের কিছু কর্মী এবং এলাকার অভিভাবকরা মিলে আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছে। এসমস্ত ভিত্তিহীন অভিযোগ।
মাদ্রাসা শিক্ষার ডাইরেক্টর আবিদ হোসেন জানান , মালদার হরিশ্চন্দ্রপুরের টালবাংরুয়া হাই মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছয় খানা সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়গুলি খতিয়ে দেখার জন্য তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, মাদ্রাসার উচ্চমাধ্যমিক পড়ুয়া ১২২ জন ট্যাব পেয়েছেন। যে কয়জন পাননি তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টগুলি নিষ্ক্রিয় রয়েছে। সেগুলি সচল করে পুনরায় আবেদন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct