কুতুবউদ্দিন মোল্লা, ক্যানিং: দুরারোগ্য রোগের যন্ত্রণা এবং বিপুল পরিমাণ চিকিৎসা খরচের ব্যয় ভারে ভারাক্রান্ত হয়ে অবশেষে আত্মহত্যার পথ বেছে নিলেন এক গৃহবধু।মৃত গৃহবধুর নাম রাখি দাস (২৭)। স্থানীয় সুত্রে জানা গিয়েছে গোসাবা ব্লকের উত্তর ডাঙা গ্রামের যুবক দীপঙ্কর দাস।পেশায় রাঁধুনী ওই যুবকের সাথে বাসন্তী ব্লকের নফরগঞ্জ এলাকার রাখি দাসের বিয়ে হয় গত প্রায় ৯ বছর আগে। দম্পতির এক আট বছরের কন্যা রয়েছে।
দিব্যি চলছিল হত দরিদ্র ওই পরিবারের সংসার। আচমকা বছর তিনেক আগে ওই গৃহবধুর গলায় ক্যানসার ধরা পড়ে। পরবর্তি যত সময় গড়িয়েছে ততই অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হয়েছেন ওই গৃহবধু ।ক্যানসার,কিডনি,সুগার সহ বিভিন্ন রোগ বাসা বাঁধে ওই গৃহবধুর শরীরে। সামান্য হোটেলে রাঁধুনীর কাজ করে তেমন আয় না হওয়ায় রোগের খরচ সামলাতে দম্পতি কলকাতা অন্যান্য কাজ করে বাড়তি রোজগারের আশায় পিয়ালীতে একটি ভাড়া ঘরে বসবাস করতে থাকেন। রোগের যন্ত্রণায় ওই দম্পতির অর্থনৈতিক অবস্থা একেবারে তলানিতে এসে ঠেকে।নিজের যন্ত্রণা ও স্বামীর অর্থনৈতিক যন্ত্রণার জন্য মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েন ওই গৃহবধু।অগত্যা দুরারোগ্য রোগের যন্ত্রণা ও চিকিৎসা খরচ যোগাতে না পেরে মুক্তি পেতে আত্মহত্যার পরিকল্পনা করে ওই গৃহবধু।গত চার দিন আগেই পরিবারের সকলের অলক্ষ্যে কীটনাশক খায়।পরিবারের লোকজন জানতে পেরেই তড়িঘড়ি উদ্ধার করে বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যায় চিকিৎসার জন্য। সেখানে থেকে সুস্থ হয়ে বাসন্তীতে বাপের বাড়িতে যায় ওই গৃহবধু। আবার বরিবার রাতে অসুস্থ বোধ করলে গৃহবধুর স্বামী দীপঙ্কর দাস তড়িঘড়ি ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যায় চিকিৎসার জন্য।অভিযোগ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আগেই রাস্তায় মারা যায় ওই গৃহবধু।ক্যানিং থানার পুলিশ মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়না তদন্ত পাঠিয়ে তদন্ত শুরু করেছে। অন্যদিকে স্ত্রীকে দুরারোগ্য রোগ থেকে বাঁচাতে চিকিৎসার জন্য প্রচুর টাকা ঋণ করেছিলেন দীপঙ্কর দাস। শেষমেষ স্ত্রী কে বাঁচাতে না পেরে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct