সেখ মহম্মদ ইমরান, মেদিনীপুর: নির্বাচন কমিশন মমতার আঘাতকে দুর্ঘটনা বললেও মমতা কিন্তু মানতে নারাজ। সেকথা আর রাখঢাক না রেখে নির্বাচনী সভায় বলে বেড়াচ্ছেন মমতা। মমতা বারে বারে বলছেন, তাকে গাড়ির দরজা ধাক্কা মেরে তাকে ‘শেষ করে’ দেওয়ার চক্রান্ত করা হয়েঝিল। বৃহস্পতিবার মেদিনীপুরের বেশ কয়েকটি জায়গায় সভা থেকে সেই কথারই পুনরাবৃত্তি করলেন মমতা। কেশিয়ারি সভায় আঘাত নিয়ে কোনও মন্তব্য না করলেও গড়বেতা আর কলাইকুণ্ডার সভায় মমতা সাফ জানিয়ে দিলেন, তাকে গুড়িয়ে দেওয়ারই চেষ্টা হয়েছিল। মমতা তার আঘাত সম্পর্কে বলেন, ‘আঘাত আগেও লেগেছে। আমার মাথায় ৪৬টা সেলাই পড়েছে। চোখে অপারেশন হয়েছে। কারণ আমাকে গুলি করার চেষ্টা করা হয়েছিল। কোমরে লাঠির বাড়ি মেরেছিল এখনও বেল্ট পড়তে হয়। দু’হাত ভেঙে দিয়েছিল। পা বাকি ছিল। এখন সেটাও গুড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করল।’
গড়বেতার সভায় মমতা বলেন, নন্দীগ্রামের ঘটনার রেশ এখনও কাটেনি। তার পায়ে এখন রক্ত জমাট বেঁধে আছে। অবশ্য কলাইকুন্ডার সভা থেকে মমতা নন্দীগ্রামের হামলার মধ্যে চক্রান্তের তত্ত্ব তুলে ধরে বলেন, ‘আমার পা উড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। গুঁড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। আমি না বেরলে বাংলা দখল করে নেবে বিজেপি।’
বিজেপির বাংলা দখল রুখতে রাজ্যের মানুষকে বিজেপিকে একটিও ভোট না দেওয়ার আহ্বান জানান। এ ব্যাপারে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘বিজেপিকে একটি ভোটও দেবেন না। কারণ বিজেপি দুঃসহ গরমের থেকেও দুঃসহ অত্যাচার শুরু করেছে। বিজেপিকে বাংলা দখল করতে দেওয়া যাবে না। তাই পায়ে ব্যথা নিয়েই মা–বোনেদের সঙ্গে দেখা করতে এসেছি।’
গড়বেতা ও কলাইকুণ্ডার সভা থেকে মমতা নন্দীগ্রাম প্রসঙ্গ তুললেও কেশিয়ারির সভায় কিন্তু বাংলা বাইরে থেকে গুন্ডা পাঠানোর তত্ত্ব তুলে ধরেন। এ নিয়ে বলেন, ‘বাংলায় গুন্ডা নয়। কেশিয়ারি কেশিয়ারিতে থাকবে। বিজেপি চায় বাইরের গুন্ডা পাঠিয়ে বাংলাকে দখল করতে। আপনারা কী চান বাড়ি–দোকান দখন হয়ে যাক। আগামী মে মাস থেকে সব বিধবারাই ভাতা পাবেন। বিজেপির আর একটা গেম প্ল্যান আছে তা হল–এনপিআর। ভোট না দিলে ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ দিয়ে বলবে তুমি বাদ। আমরা এনপিআর বাংলায় করতে দিইনি। বিজেপিকে বলুন তোমাদের দূর করে দিলাম। বাইরের গুন্ডারা এসে ভয় দেখাচ্ছে। খুনিদের মাস্টার। সামনে হরি হরি পেছনে ডাকাতি করি।’
এভাবে বিজেপিকে চরম সমালোচনা করেন মমতা। বিজেপিকে নিশানা করে জনগণের উদ্দেশ্যে বলেন, ওরা ভোট লুঠের চেষ্টা করলে হাতা–খুন্তি নিয়ে তেড়ে যান। ভোটের দিন মেশিন খারাপ করে বাড়ি ফেরত পাঠিয়ে দিতে চাইবে। তখন কারও দেওয়া চা–বিস্কুট, কিছু খাবেন না। কিছু মিশিয়ে খাইয়ে দিতে পারে। তবে, জনগণকে আশ্বস্ত করে মমতা বলেন, আমি আপনাদের পাহারাদার, কারোর গায়ে হাত দিতে দেব না।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct