সুলেখা নাজনীন: তৃণমূল কংগ্রেস ২০২১-এর বিধানসভা ভোটের নির্বাচনী ইস্তেহার প্রকাশিত হয়েছে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে। এবারের নির্বাচনী ইস্তেহারে রাজ্যের উন্নয়নের যে খতিয়ান তুলে ধরা হয়েছে তাতে ২০১৬ সালের নির্বাচনী ইস্তেহারে তৃণমূল যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তার কতটা বাস্তবায়ন হয়েছে তা নিয়ে কোনও কথা নেই। যদিও ২০১৬ সালের তৃণমূলের নির্বাচনী ইস্তেহারে সংখ্যালঘু উন্নয়নে যে ৩১টি প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল তার অনেকাংশই পূরণ হয়েছে বলে রাজ্যের সংখ্যালঘু দফতর প্রকাশিত তথ্য পরিসংখ্যান বলছে। ২০১৬ সালের নির্বাচনী ইস্তেহারে সংখ্যালঘু উন্নয়নকে হাতিয়ার করে বাম ফ্রন্টের ‘অপশাসনের’ জবাব দেওয়া হয়েছিল। সেই সঙ্গে সংখ্যালঘু প্রসঙ্গে বলা হয়েছিল, ‘বাংলার সংখ্যালঘু ভাইবোনেদের জন্য ভবিষ্যতেও কর্তব্যপালনে পিছপা হব না আমরা। তাদের সুখস্বাচ্ছন্দ্য সুনিশ্চিত করতে প্রচুর পরিশ্রম করব। কিছু কাজ, যা করবই, তার কথা এখানে জানালাম। মনে রাখা প্রয়োজন যে এই তালিকাটিতেই আমাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সীমাবদ্ধ নয়।’ কিন্তু ২০২১-এর নির্বাচনী ইস্তেহারে সংখ্যালঘু প্রসঙ্গ প্রায় এড়িয়ে গিয়েছে তৃণমূল। প্রত্যেক পরিবারের আয় সুনিশ্চিত নিয়ে প্রথম বাংলার প্রত্যেক পরিবারের ন্যুনতম মাসিক আয় সুনিশ্চিত করার জন্য নতুন প্রকল্প শুরু করা হবে বলেছে তৃণমূল। তাতে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে যেখানে ১.৬ কোটি যোগ্য জেনারেল ক্যাটেগরির পরিবারের কর্ত্রীকে মাসিক ৫০০ টাকা ও তফসিলি জাতি ও উপজাতি পরিবারের কর্ত্রীকে ১,০০০ টাকা করে সহায়তা প্রদান করা হবে। তবে, ওবিসি বা সংখ্যালঘুদের কথা অবশ্য উল্লেখ করা হয়নি।
২০১৬ সালের নির্বাচনী ইস্তেহার অনুয়ায়ী সংখ্যালঘু উন্নয়নের জন্য দেওয়া হয়েছিল, ৩১টি প্রতিশ্রুতি। তার মধ্যে যেমন আইএএস বা ডব্লুবিসিএস কোচিং ছিল, তেমনি সংখ্যালঘু বৃত্তি বৃদ্ধি, মুসলিমদের আবাসন ব্যবস্থার কথাও বলা হয়েছিল। সম্প্রতি রাজ্য হজ হাউস ডব্লুবিসিএস কোচিংও শুরু করেছিল। কিন্তু এসবের কোনও উল্লেখ এবারের নির্বাচনী ইস্তেহারে না থাকার পিছনে বিজেপির মুসলিম তোষণ তকমাই হয়তো তাড়া করে বেড়িয়েছে তৃণমূলকে। নচেৎ, রাজ্যের প্রায় ৩০ শতাংশ মুসলিমদের জন্য এবারের নির্বাচনে তৃণমূলের নির্বাচনী ইস্তেহারে কোনও দিশা নেই কেন, তা নিয়ে ইতিমধ্যে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct