আপনজন ডেস্ক: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আফগাস্তিান থেকে সেনা সরিয়ে নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে। তার পরিপ্রেক্ষিতে আফগান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাসুদ আন্দারাবি বলেছেন, আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্র সেনা প্রত্যাহারের কোনো সিদ্ধান্ত নিলে এর পরিণতি ভয়াবহ হবে।তার দাবি, যুক্তরাষ্ট্র সেনা প্রত্যাহারের মতো অবিবেচক কোনো সিদ্ধান্ত নিলে সেটা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে বৈশ্বিক প্রয়াসকে আরও জটিল করে তুলবে।
শনিবার সংবাদ ষংস্থার সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে মাসুদ আন্দারাবি বলেন, সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আল কায়েদার সঙ্গে তালিবানের সম্পর্ক অটুট রয়েছে। আর এ কারণে যুদ্ধপীড়িত এই দেশটি থেকে সেনা প্রত্যাহারের মতো কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে; সেটা হবে অবিবেচক সিদ্ধান্ত।
আফগানিস্তানে শান্তি ফেরাতে যুক্তরাষ্ট্র একটি ‘শান্তি পরিকল্পনার’ প্রস্তাবের খসড়া প্রস্তুত করেছে। সম্প্রতি সেই খসড়া প্রস্তাব প্রকাশ হয়। এরপরই আফগান স্বারাষ্ট্রমন্ত্রীর এমন বক্তব্য সামনে এলো।
প্রস্তাবিত এই খসড়া অনুযায়ী, আফগানিস্তানের বর্তমান সরকারের স্থলে নতুন অন্তর্বর্তীকালীন একটি প্রশাসন দায়িত্ব নেবে। নতুন একটি সংবিধান প্রণয়ন এবং নির্বাচন সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত সেই প্রশাসন ক্ষমতায় থাকবে। তবে দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি অন্তর্বর্তীকালীন কোনো প্রশাসনের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে আগেই অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই পরিকল্পনা সামনে আসার পর আফগানিস্তানে সম্ভাব্য অন্তর্বর্তীকালীন যেকোন প্রশাসনের ক্ষমতা কাঠামোয় তালিবান বিদ্রোহীদের অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে নিজেদের মতামত জানিয়ে রেখেছে রাশিয়া।
অন্যদিকে, সংবাদ সম্মেলনে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেন, ‘আফগানিস্তানে সম্ভাব্য অর্ন্তবর্তীকালীন যেকোনো জোট সরকার গঠনের বিষয়ে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে আফগান নাগরিকরাই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।’
তিনি বলেন,‘একইসঙ্গে তালেবান বিদ্রোহীরা যেন শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে ফিরে আসতে পারে, সেটা অর্ন্তবর্তীকালীন এই প্রশাসন গঠনের সময় যৌক্তিকভাবে সমাধান ও নিশ্চিত করতে হবে।’
আফগানিস্তান ইস্যুতে একটি সম্মেলনের আয়োজন করেছে রাশিয়া। আগামী ১৮ মার্চ থেকে সম্মেলনটি মস্কোয় শুরু হওযার কথা রয়েছে। সম্মেলনে আঞ্চলিক ভাবে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন দেশসহ তালেবান বিদ্রোহী গোষ্ঠীর প্রতিনিধি দলকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আগামী মে মাসের ১ তারিখের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে সকল বিদেশি সেনা সরিয়ে নেওয়ার কথা রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের।
যদিও সেনা রাখা বা সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে বাইডেন প্রশাসন এখনও স্পষ্ট করে কিছুই জানায়নি, তারপরও নির্ধারিত ডেডলাইনের আগে মস্কোর আয়োজনে এই সম্মেলনকে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
মস্কোর দাবি, কাতারে আফগান সরকার ও তালেবান বিদ্রোহীদের মধ্যে শান্তি আলোচনায় কোনো ফলাফল আসেনি এবং এর কারণে দেশটিতে শান্তি প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে আগামী সপ্তাহে এই সম্মেলনের আয়োজন করেছে তারা।
আর এই দোলাচলের মধ্যেই আফগান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দাবি, কোনো পরিকল্পনা ছাড়াই হঠাৎ করে সেনা অপসারণ, আমাদের দেশ তথা বিশ্বের সন্ত্রাসবাদ বিরোধী অভিযানকে হুমকির মুখে ফেলে দেবে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct