আপনজন ডেস্ক: চিনের জিনঝিয়াং প্রদেশে মুসলিম উইঘুর জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে গণহত্যা চলছে বলে অভিযোগ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বুদ্ধিজীবী মঞ্চ। মঙ্গলবার নিউজলাইন ইনস্টিটিউট ফর স্ট্রাটেজি অ্যান্ড পলিসি’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেইজিং উইঘুরদের ওপর রাষ্ট্রসংঘের গণহত্যা বিরোধী কনভেনশনে নিষিদ্ধ সব কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে বলে ‘স্পষ্ট এবং বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ’ পাওয়া গেছে।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডাসহ কয়েকটি দেশের পক্ষ থেকে একই অভিযোগ আনা হলেও তা অস্বীকার করেছে বেইজিং। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। উইঘুর মুসলমানদের সঙ্গে চিনের আচরণকে ইতোমধ্যে গণহত্যা বলে আখ্যা দিয়েছে মার্কিন সরকার এবং কানাডা ও নেদারল্যান্ডসের পার্লামেন্ট। মানবাধিকার হরণের অভিযোগে বেশ কয়েক জন চীনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ওয়াশিংটন। তারপরও গণহত্যার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে আসছে বেইজিং। তাদের দাবি উগ্রবাদ মোকাবিলায় জিনজিয়াং-এ অন্তবর্তী শিবির এবং ভোকেশনাল প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালানো হচ্ছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৪ সালে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জনযুদ্ধ’ ঘোষণার পর বেইজিং যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে তাতে উইঘুর জনগোষ্ঠী ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। ওই ঘোষণার পর চীনা কর্মকর্তারা গণহারে বন্দি, উইঘুর নেতাদের হত্যা, জোর করে বন্ধ্যাত্বকরণ, পরিবার থেকে শিশুদের বিচ্ছিন্ন করে ফেলা এবং মুসলিম জনগোষ্ঠীটির পরিচয় নিশ্চিহ্ন করে ফেলছে।
নিউজলাইন বলছে, তাদের প্রতিবেদনটি উইঘুরদের সঙ্গে চীনের আচরণের প্রথম স্বাধীন বিশ্লেষণ। ১৯৪৮ সালের গণহত্যা প্রতিরোধ এবং শাস্তির কনভেনশন অনুযায়ী এই বিশ্লেষণ করা হয়েছে বলে দাবি তাদের। এতে ৩০ জনের বেশি বিশেষজ্ঞের মতামত স্থান পেয়েছে। এসব বিশেষজ্ঞ চীন সরকারের প্রচারপত্র, প্রত্যক্ষদর্শীদের স্বাক্ষ্য এবং স্যাটেলাইটের ছবি সংগ্রহ ও যাচাই করে পরীক্ষা করে দেখেছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশেষজ্ঞদের অনুসন্ধানে দেখা গেছে যে পাঁচটি কাজের মাধ্যমে গণহত্যা সংগঠিত হয় তার প্রতিটিই চীন সরকার করেছে বলে স্পষ্ট ও বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া গেছে। এই পাঁচটি কাজ হলো জনগোষ্ঠীর সদস্যদের হত্যা করা, তাদের শারিরীক এবং মানসিক ক্ষতিসাধন করা, অংশ বিশেষ কিংবা পুরো শরীরের ক্ষতিসাধনের উদ্দেশে শর্তারোপ করা, জন্ম প্রতিরোধে পদক্ষেপ নেওয়া এবং এক জনগোষ্ঠী থেকে অন্যত্র শিশুদের জোর করে সরিয়ে ফেলা।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct