আপনজন ডেস্ক: গত এক বছর ধরে বন্ধ থাকা দিল্লির নিজামুদ্দিনে তবলিগি মারকাজ খুলে দেওয়ার ব্যাপারে দিল্লি সরকার ও দিল্লি পুলিশ ১০ দিন সময় চাইল দিল্লি হাইকোর্টের কাছে। নিজামুদ্দিন মারকাজ খুলে দেওয়ার ব্যাপারে এক আবেদনের ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় সরকার, দিল্লি সরকার ও পুলিশ ১০ দিন সময় চাওয়ায় শুক্রবার তা মঞ্জুর করেছে হাইকোর্ট।
করোনা সংক্রমণের কারণে দিল্লির নিজামুদ্দিন তবলিগি মারকাজ বন্ধ। ২০২০ সালের ২৯ মার্চ পুলিশ ও স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ লকডাউনে বন্দি হয়ে থাকা নিজামুদ্দিনের তবলিগি মারকাজ থেকে তবলিগিদের বের করে আনতে শুরু করে। তারপর তাদেরকে হাসপাতালে ও কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়।
ওই বছরের ৩১ মার্চ নিজামুদ্দিন তবলিগি মারকাজে তবলিগি ইজতেমায় হাজার খানেক দেশ-বিদেশের তবলিগি অংশ নেওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়। পরে তাদের মধ্যে কয়েকজনের করোনা পজিটিভ হয়।
এখন নিজামুদ্দিন তবলিগি মার্কাজ খুলে দেওয়ার ব্যাপারে দিল্লি ওয়াকফ বোর্ড দিল্লি হাইকোর্টে আবেদন জানায়। সেই আবেদনের ভিত্তিতে দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি মুক্তা গুপ্তা সরকারের কাছে স্ট্যাটাস রিপোর্ট দশ দিনের মধ্যে দেওয়ার নির্দেশ দেন। দিল্লি ওয়াকফ বোর্ডের তরফে আর্জিতে আরও বলা হযেছিল, ২০২০ সালের ৩০ মে আনলক ১ পর্ব চালু হয়। এরপর ২০২০ সালের ৮ জুন কন্টেনমেন্ট জোনের বাইরে থাকা ধর্মীয় স্থানগুলোর তালিকা তৈরি করে সেগুলি খুলে দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়। কিন্তু সেই তালিকায় নিজামুদ্দিন এলাকা স্থান পায়নি।
নিজামুদ্দিন এলাকাকে কন্টেনমেন্ট জোন হিসেবে ধরা হয়। এরপর ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে নিজামুদ্দিন এলাকা কন্টেনমেন্ট জোনের তালিকা থেকে বাদ গেলেও তারপর থেকে নিজামুদ্দিনের তবলিগি মার্কাজের ওয়াকফ সম্পত্তি এখনও বন্ধ। তাই ২০২০ সালের ৩১ মার্চ থেকে বন্ধ করে দেওয়া নিজামুদ্দিন তবলিগি মার্কাজ অবিলম্বে খুলে দেওয়ার আর্জি জানানো হয়। সেই আর্জিতে সাড়া দিয়ে দিল্লির সরকার ও দিল্লি পুলিশ নিজামুদ্দিন তবলিগি মার্কাজ খুলে দেওয়ার ব্যাপারে তাদের আপত্তি না থাকার কথা জানায়।
উল্লেখ্য, করোনা সংক্রমণ ছড়ানোর অভিযোগ তুলে দিল্লির নিজামুদ্দিন তবলিগি মার্কাজ বন্ধ করে দেয় দিল্লি পুলিশ। শুধু তাই নয়, লাগাতার তবলিগিদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হয় করোনা ছড়ানোর অপবাদ দিয়ে। এক শ্রেণির মিডিয়া ও বিজেপি নেতারা তবলিগিদের বিরুদ্ধে কুৎসা ছড়ানোর অভিযোগ ওঠে। তাদের সেই অভিযোগ ওঠার পর থেকে একের পর এক বিদেশি তবলিগিদের মহামারি আইন উল্লংঘন ও বিদেশি আইন ভাঙার অভিযোগ তুলে গ্রেফতার করা হয়। যদিও আদালত তাদেরকে বেকসুর খালাসের নির্দেশ দেওয়ার পর প্রায় সব বিদেশি তবলিগি এখন জেলমুক্ত। কিছু বিদেশি অবশ্য এখনও আইনি জটিলতার কারণে এখনও দেশে ফিরতে পারেননি।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct