আপনজন ডেস্ক: একমাত্র এসইউসিআই ছাড়া এখনও এ রাজ্যের শীর্ষ রাজনৈতিক দলগুলি আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করতে পারেনি। আজ বুধবার তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী ঘোষণা করারর কথা। বিজেপি ঘোষণা করবে শুক্রবার আর বাম-কংগ্রেসআইএসএফ জোট ঘোষণা করবে ৮ মার্চ।
প্রথম দফার ভোটের মনোায়নপত্র জমা দেওয়ার দিন শুরু বুধবার। আর শেষ তারিখ মঙ্গলবার ৯ মার্চ। তাই একেবারে প্রায় শেষ দিনে বাম কংগ্রেসের প্রার্থী ঘোষণা অনেকটাই দেরি করে দির বলে মনে করা হচ্চে। অতীতে বামেদের তরফ থেকে এমন দেরি দেখা যাীন। তবে ভোটের চক্করে পড়ে আর আব্বাস সিদ্দিকীর সঙ্গে জোট নিয়ে সময় চলে যাওয়ায় এই বিলম্ব বলে বাম নেতারা বলছেন।।
মঙ্গলবার আইএসএফ-এর সঙ্গে চূড়ান্ত আসন রফা নিয়ে বাম ও কংগ্রেস নেতারা বৈঠকে বসেছিলেন।
এদিন মঙ্গলবার সিপিএমের রাজ্য দফতর আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে বসেন বাম-কংগ্রেস-আইএসএফ নেতারা। বৈঠকে ছিলেন সিপিএমের বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিশ্র, মুহাম্মদ সেলিম, কংগ্রেসের আব্দুল মান্নান, প্রদীপ ভট্টাচার্য এবং আইএসএফে চেয়ারম্যান নওশাদ সিদ্দিকি। সেই বৈঠকেই প্রার্থী তালিকা ঘোষণার দিন নিয়ে আলোচনা হয়। জানা গিয়েছে, আগামী ৮ মার্চ তিন দল একসঙ্গে বসে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করবে। কোথায় ঘোষণা হবে তা এখনও ঠিক হয়নি। আগামী দু’এক দিনের মধ্যে তা জানানো হবে। প্রথম দফার ভোটের জন্য ৩ মার্চ মঙ্গলবার থেকে মনোনয়ন জমা দেওয়ার কাজ শুরু হবে।
কিন্তু জোটের আসন ভাগাভাগি এখনও চূড়ান্ত না হওয়ায় প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করতে কিছুটা দেরি হবে বলে জোট সূত্রে খবর। তবে ৮ মার্চ প্রার্থী ঘোষণার ক্ষেত্রে কিছুটা সতর্কতার সঙ্গে এগোতে চাইছেন জোটের নেতারা। কারণ ৯ মার্চ মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন। তাই ওই দিন যাতে প্রার্থীর মনোনয়ন জমা দিতে কোনও সমস্যা না হলে আর মাত্র একদিন হাতে থাকবে। খুবই সতর্কভাবে মনোনয়নপত্র পূরণ করে জমা দেওয়ার জন্য নজর রাখছেন জোট নেতৃত্ব।
এদিনের বৈঠকে মূলত আইএসএফকে আসন ছাড়া নিয়ে আলোচনা হয়। সূত্রের খবর মুর্শিদাবাদের কয়েকটি ও মালদার কয়েকটি আসনে কংগ্রেস যেখানে দ্বিতীয় ছিল গত বিধানসভা নির্বাচনে সেই আসনগুলি দাবি করে আইএসএফ।
কিন্তু সংগঠন এখনও গড়ে তুলতে না পেরে কংগ্রেসের সাজানো বাগান ছাড়তে চাননি অধীর। সূত্রের খবর, এই আসন ছাড়া নিয়ে বাম শরিক দল ফরেওয়ার্ড ব্লকের সঙ্গে বিবাদ বেধেছে। মুসলিম অধ্যুষিত দেগঙ্গায় ও পাঁলায় বরাবর ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থী দিয়ে এসেছ। সেই আসন আইএসএফ তাবি করায় আপত্তি তোলে ফব।
অন্যদিকে অধীর চৌধুরি যেভাবে কংগ্রেস হাইকমান্ড থেকে কোনও সবুজ সংকেত না পেয়েছে আইএসএফের সঙ্গে জোটের কথা ঘোষণা করেছেন তাদের কেন্দ্রীয় কংগ্রেস নেতা আনন্দ শর্মা অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, আইএসএফ বা মুসলিম লিগের মতো দলের সঙ্গে জোটের আগে তাদের ধর্মনিরপেক্ষ আদর্শ বিচার করে কংগ্রেস এগোতে চায়। সেদিকে নজর দেওয়া উচিত ছিল অধীেরের বলে মন্তব্য করেন তিনি। তবে প্রদেশ কংগ্রেস সূত্রে জানা গেছে, মাত্র গোটা সাতেক আসন ছাড়তে রাজি হয়েছে কংগ্রেস। তাই বামেদের ৩০টি মিলিয়ে আইএসএফ তাদের প্রার্থী সংখ্যা ৪০ পেরতে পারছে না বলে সূত্রের খবর। যদিও প্রথম থেকে পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকী বলে আসছিলেন তাদেরকে অন্তত ৬০টি আসন ছাড়তে হবে। আর বাম শরিকদের জন্য এবার আব্বাসের দলের থেকে কম আসন দেওয়া হযেছে। সিপিআই-কে ৯টি, ফরওয়ার্ড ব্লক-কে ১৫টি এবং আরএসপি-কে ১১টি আসন ছাড়ার কথা বলেছেন বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান। কংগ্রেস ৯২টি আসনে লড়বে। আর বাকি আসনে সিপিএম লড়বে।
অন্যদিকে, আব্বাস সিদ্দিকীর দরের সঙ্গে জোট করা বামেদের সমালোচনা করেছে বিজেপি। বামেদের অনেক শরিক দলও এ নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করলেও তা নিয়ে আর বেশি দূর গড়ায়নি। কারণ, তাদেরকে বলা হযেছে মতুয়াদের নিয়ে খোদ প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী প্রকাশ্যে গুরুত্ব দিলে যদি ধর্ম প্রসঙ্গ না আসে সেখানে ধর্মনিরপেক্ষতার সওয়াল করা আব্বাস সিদ্দিকীর প্রতি বিমাতৃসুলভ মনোভাব কেন সেই প্রশ্ন তোলা হয়। তবে, এদিন আব্বাস সিদ্দিকীর দল আসাদউদ্দিন ওয়াইসির দল মিম-এর সঙ্গে জোট নিয়ে কোনও কথা বলেনি।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct