সাদ্দাম হোসেন মিদ্দে, ভাঙড়: ভোট বাক্সে যাই হোক, ভোটের লড়াইয়ে সবার থেকে এগিয়ে সিপিআইএমএল রেডস্টার। প্রথম কোন দল হিসাবে ভাঙড়ে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করল তারা। ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে দেওয়াল লিখনের কাজ। পাওয়ার গ্রিড সংলগ্ন পোলেরহাট ২ অঞ্চলের বিভিন্ন গ্রামে জ্বলজ্বল করছে প্রার্থী মির্জা হাসানের নাম। অন্যান্য নির্বাচনগুলোতে কমিশন নির্ঘন্ট প্রকাশ করতেই প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করতো শাসক তৃণমূল। কিন্তু এবছর নির্ঘন্ট প্রকাশ হলেও প্রকাশ হয়নি তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা। স্বাভাবিক ভাবেই তাই ভাঙড়ের ক্ষেত্রেও কে হবেন শাসক দলের প্রার্থী তা অজানা। ফলে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা বিভিন্ন এলাকায় দেওয়াল লিখনের কাজ শুরু করলেও প্রার্থীর নাম লিখতে পারছেন না। কে হবেন ভাঙড়ে জোড়া ফুলের প্রার্থী? এই নিয়ে চলছে নানা আলোচনা। বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে নানা নাম। আনাচে কানাচে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে তৃণমূলের দোর্দন্ড প্রতাপ নেতা আরাবুল ইসলামের নাম। শোনা যাচ্ছে জেলা পরিষদ সদস্য নান্নু হোসেন ও ব্লক সভাপতি ওহিদুল ইসলামের নামও। বহিরাগত প্রার্থী হিসাবে নাম শোনা যাচ্ছে সাংবাদিক আহমেদ হাসান ইমরান, প্রাক্তন আইপিএস হুমায়ন কবিরের নাম। কেউ কেউ বলছেন মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী অথবা মন্ত্রী জাভেদ খান পুত্রের নামও। এত গুলো নামের মধ্যে কে হবেন শাসক দলের প্রার্থী? তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখ থেকে সেই ঘোষণা শোনার অপেক্ষায় সবাই।
শাসক দলের কথা তো হল। এবার আসা যাক বৃহৎ বিরোধী দলগুলোর কথায়। এককালে বাম দূর্গ ছিল দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার ভাঙড়। এখন অবশ্য তারা ফিকে। শক্তি বাড়িয়েছে রাজনীতির ময়দানে সদ্য পা রাখা আইএস এফ। দীর্ঘ প্রায় তিন দশক পরে কিছুটা হলেও দেখা মিলছে জাতীয় কংগ্রেসের। সিপিএমের প্রার্থী হিসাবে নাম শোনা যাচ্ছিল রশিদ গাজির নাম। কংগ্রেস কর্মী- সমর্থকরা দাবী করেছিলেন প্রার্থী হবেন রফিকুল ইসলাম। বাম-কংগ্রেস- আইএসএফ জোট তৈরি হয়েছে। যদিও কংগ্রেসের সঙ্গে আইএসএফ-এর কিছু জায়গায় সমঝোতা সম্পর্ণ হয়নি। আইএসএফ কর্ণধার আব্বাস সিদ্দিকী ভাঙড় আসনটি ছাড়ার জন্য জোটের কাছে আবেদন করে রেখেছেন। বামেদের পক্ষ থেকেও সবুজ সংকেত দেওয়া হয়েছে আসনটি ছাড়ার জন্য। সেক্ষেত্রে আব্বাস সিদ্দিকীর কনিষ্ঠ ভ্রাতা নওশাদ সিদ্দিকী ভাঙড়ে লড়বেন বলে খবর। অপরদিকে বিজেপির হয়ে লড়তে পারেন শান্তি হাতি অথবা অবনী মন্ডল। তবে কোন দলই অফিসিয়াল ভাবে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেনি।
সিপিআইএমএল রেডস্টার এক্ষেত্রে সব দলের থেকে এগিয়ে। পাওয়ার গ্রিড আন্দোলনের অন্যতম প্রধান মুখ তথা জমি জীবিকা বাস্তুতন্ত্র ও পরিবেশ রক্ষা কমিটির যুগ্ম সম্পাদক মির্জা হাসানকে প্রার্থী করে রবিবার থেকে শুরু হয়েছে দেওয়াল লিখন। পাশাপাশি শুরু হয়েছে নির্বাচনী সভার কাজও। মির্জা হাসানকে জয়ী করার আহ্বান জানিয়ে দেওয়াল ভরেছে মাছিভাঙা, খামারাইট, গাজীপুর, টোনা, উড়িয়াপাড়া, শ্যামনগর, স্বরুপ নগর প্রভৃতি গ্রামে।
এবিষয়ে জানতে চাওয়া হলে মির্জা হাসান বলেন, ‘ভাঙড়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই আরও শক্তিশালী করতে আমরা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি। তৃণমূলের দূর্নীতি ও বিজেপির সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে আমরাই জোরালোভাবে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি। আমরা অপশাসন ও বিভাজনের বিরুদ্ধে। ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার এই কথা মাথায় রেখে আমরা কোন সাম্প্রদায়িক শক্তির সঙ্গে আঁতাত করার পথে হাঁটেনি। নৈতিকতা ও আদর্শের ভিত্তিতে আমরা একক ভাবেই লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রচার শুরু করেছি।”
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct