নাজিম আক্তার, চাঁচল: জমির ন্যায্য মূল্য পাওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ দেখালেন চাষিরা। সোমবার মালদহের চাঁচল-হরিশ্চন্দ্রপুর ৮১ নং জাতীয় সড়কের রানীকামাতের ঘটনা। জমির ন্যায্য মূল্য না পেলে তারা জমি ছাড়বে না বলে হুঁশিয়ারি দেন। এমনকি গুলি খেতেও প্রস্তুত বলে জানান এক বধূ হাজেরা বিবি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ৮১ নং জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের জন্য রাস্তার দুইধারের দ্বিফসলী জমি ও বাস্তভিটে সরকার নোটিশ দিয়ে জমি ছেড়ে দেওয়ার আবেদন করেছেন। কিন্ত চাষিরা সরকারের কাছ থেকে ন্যায্য মূল্য না পাওয়ার দরুন ২০১৩ সালে সরকারি অফিস-আদালতে দরবার করলেও কোনো আশ্বাস মেলেনি বলে দাবি।
অবিযোগ ন্যায্য টাকা না দিয়ে কাজ শুরু করে দিয়েছে পূর্ত দপ্তরের আধিকারিকরা। এমনকি চাষিদের না জানিয়ে সদ্য ধান লাগানো ফসল জেসিবি দিয়ে উচ্ছেদ করে দেয় রবিবার। এমনটাই জানালেন হাতিন্দা মৌজার ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিক হোসেন আলি। চাষিদের পরিবার কিভাবে সারাবছর আহার জুটাবে তা নিয়ে কপালে পড়েছে চিন্তার ভাঁজ। তাই নষ্ট হয়ে যাওয়া ফসল ও জমির ন্যায্য মূল্যের দাবিতে সোমবার চাঁচল ও হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার প্রায় শতাধিক প্রান্তিক চাষি জাতীয় সড়কের ধারে পূর্ত দপ্তর আধিকারিকদের ঘিরে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। চাষিদের দাবি, চাঁচল -১ নং ব্লকের হাতিন্দা,খেলেনপুর ও হরিশ্চন্দ্রপুর-১ নং ব্লকের কনুয়া মৌজার প্রায় ১০০ একর জমির চাষিরা ন্যায্য মূল্য পাননি। এছাড়াও একই মৌজায় ভিন্ন ভিন্ন জমির মূল্য দিয়েছে সরকার বলে চাষিদের অভিযোগ। চাষিদের প্রশ্ন একই মৌজাতে সরকার ভিন্ন ভিন্ন দাম কিসের ভিত্তিতে করেছে তা তারা কিছুই বুঝতে পারছেন না। একদিকে রানীকামাতের এক বধূ হাজেরা বিবির অভিযোগ, ২ কাঠা বাস্তুভিটে নিয়েছে সড়ক কর্তৃপক্ষ। তবে ৭০৫৪০ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে। তিন লক্ষ টাকার ভিটে আছে দলিল পত্রে তা উল্লেখ করা আছে বলে দাবি ওই বধূর। ন্যায্য দাম না মিললে পাকা বাড়ি ভাঙতে দেবেন না বলে তিনি জানিয়েছেন। হাতিন্দা মৌজার এক চাষি জুমারত আলি জানালেন,এই মৌজায় ২০ হাজার টাকা শতক দরে জমি নিয়েছে সড়ক কর্তৃপক্ষ। ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত তারাও। তাদের অভিযোগ, শুধু আশ্বাস মেলে। ন্যায্য ক্ষতিপূরণ মিলছে না। তার আগেই সড়ক সম্প্রাসারনে কাজ শুরু করে দিয়েছে।জমিহারা দের দাবি, উপযুক্ত মূল্য দিয়ে কাজ শুরু করুক ।না হলে বৃহত্তর আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছে তারা।এবং কাজ আটকে দেওয়ার পরিকল্পনাও রয়েছে চাষিদের। পূর্ত দফতরের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার তিমির বরন সাহা এ বিষয়ে সাফ জানিয়েছেন, প্রশাসন নিজের নিয়মেই কাজ করছে এবং করবে। সামসি থেকে লাভা পর্যন্ত যারা স্ব-ইচ্ছায় কাজ করতে দিচ্ছে,কাজ হচ্ছে। অধিকাংশ জমির মালিকের বকেয়া ক্ষতিপূরণ বাকি থাকলেও কাজ করতে দিচ্ছে বলে দাবি ইঞ্জিনিয়ারের। তবে হাতিন্দা,কনুয়া ও খেলেনপুর মৌজার ক্ষতিপূরণ নিয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct