বাবরি মসজিদ-রামমন্দির বিবাদ এখন স্তিমিত। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে বিষয়টির ফয়সালা করা হলেও তা নিয়েও বিতর্ক রয়েছে। যদিও ভূমিপুজোর মাধ্যমে রামন্দিরের যাত্রা শুরু হয়ে গেছে। অযোধ্যায় অতীত হয়ে উঠছে বাবরি মসজিদের ইতিহাস। কিন্তু মানুষের মধ্যে এখনও বাবরি মসজিদ-রামমন্দির নিয়ে বিবাদের পরিপ্রেক্ষিতে প্রকৃত সত্য উদঘাটনের আগ্রহ অব্যাহত রয়েছে। তাই রামের ইতিহাস থেকে শুরু করে রামমন্দির, বাবর থেকে শুরু করে বাবরি মসজিদ- সমগ্র বিষয়টি নিয়ে এই অনুসন্ধিৎসু প্রতিবেদনটি লিখেছেন দিলীপ মজুমদার। ঊনবিংশ কিস্তি।
২০০২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারির সকাল। ২০০৩ সালে আদালতের নির্দেশে অযোধ্যায় জরিপ ও খনন কাজ শুরু করেন নৃতত্ববিদরা। অযোধ্যা খনন এই প্রথম নয়। তার একটা ইতিহাস আছে। ১৮৬২-৩ সালে আর্কিয়োলজিকাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার প্রতিষ্ঠাতা আলেকজান্ডার কানিংহ্যাম অযোধ্যায় এক সমীক্ষা চালান। তিনি সেখানে প্রাচীন স্থাপত্যের নিদর্শন পান নি। হয়তো সেসব কালের প্রহার সহ্য করতে পারে নি। উজ্জয়িনীর বিক্রমাদিত্য নতুন মন্দির নির্মাণ করেন। কিন্তু সপ্তম শতকে হিউয়েন সাঙ যখন সেখানে আসেন তখন সেসব মন্দির আর অক্ষত ছিল না। অযোধ্যা তখন পরিণত হয়েছিল বৌদ্ধকেন্দ্রে।
১৮৮৯-৯১ সালে অলয়েস অ্যান্টন ফুয়েরারের নেতৃত্বে আর একটি সমীক্ষা চালান আর্কিয়োলজিকাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া। ফুয়েরারও সেখানে কোন প্রাচীন মূর্তি, স্তম্ভ বা স্থাপত্যরীতির নজির খুঁজে পাননি। মণি পর্বত, কুবের পর্বত ও সুগ্রীব পর্বত নামে তিনটি ঢিবি তাঁর নজরে আসে। মুসলমান বিজয় পর্যন্ত সেখানে তিনটি মন্দির থাকার কথা বলেছেন ফুয়েরার। ১৯৬৯-৭০ সালে কাশী হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের এ কে নারায়ণ অযোধ্যা খনন করেন। তিনিও সেখানে বৌদ্ধযুগের নিদর্শন দেখতে পান। ১৯৭৫-৭৬ সালে আর্কিয়োলজিকাল সার্ভের একটি দল প্রাক্তন ডাইরেক্টর বি বি লালের নেতৃত্বে বিস্তৃত খনন চালান। রামায়ণ কাহিনির সঙ্গে যুক্ত যে পাঁচটি স্থানে খনন করা হয় সেগুলি হল : অযোধ্যা, ভরদ্বাজ মুনির আশ্রম, নন্দীগ্রাম, চিত্রকূট, শ্রীনগভেরপুরা। সেখানে তিনি প্রাচীন হিন্দুরীতির কিছু নিদর্শন দেখতে পান, ‘ Attached to the piers of the Babri Masjid, there were twelve stone pillars, which carried not only typical Hindu motifs and mouldings, but also figures of Hindu deities. It was self-evident that these pillars were not an integral part of the Masjid, but were foreign to it ‘ [ ড. দিলীপ মজুমদার সম্পাদিত কেদারনাথ মজুমদারের ‘রামায়ণ ও তার সমাজ’ , পৃঃ ৮৯]
১৯৯২ সালে আর্কিয়োলজিকাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার আটজন প্রত্নতাত্ত্বিক রামকোট পর্বতে গিয়ে যে সমীক্ষা চালিয়েছিলেন তার ফলাফল সম্বন্ধে অধ্যাপক এস পি গুপ্ত বলেছেন, ‘ The team found that the objects were datable to the period ranging from 12th century AD ,ie, the period of late Pratihar and early Gahadvals. These objects included a number of amakalas,ie, the cogged-wheel type architectural element which crown the bhumi shikharas or spires of subsidiary shrines, as well as the top of the spire or the main shikhara…. This is a chacteristic feature of all north Indian temples of the early medieval period. There was other evidence of cornics, pillar capitals, mouldings, door jambs with floral patterns and others….. leaving little doubt regarding the existence of a 10th – 12th century temple cmplex in the site of Ayodhya,’[ ঐ]
উত্তরপ্রদেশের এলাহবাদ হাইকোর্টের নির্দেশে এ এস আই বা আর্কিয়োলজিকাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া রাম জন্মভূমি/ বাবরি মসজিদ অঞ্চলে খনন শুরু করে ২০০৩ সালে। এতে ৫২ জন মুসলিমসহ ১৩১জন শ্রমিক অংশগ্রহণ করেন। ২০০৩ সালের ১১ জুন তাঁরা মধ্যবর্তী প্রতিবেদন জমা দেন। ২২ মে থেকে ৬ জুনের মধ্যে তাঁরা খননের ফলে যা পেয়েছিলেন তা হল : “ Among the structures listed in the report are several brick walls ‘in east-west orientation’, several ‘in north-south orientation’ , ‘decorated coloured floor’, several ‘pillar bases’ and a ‘1.64-metre high decorated black stone pillar ( broken) with figurines on four corners’ as well as inscription of holy verses on stone in Arabic language. “
২০০৩ সালের আগস্ট মাসে এ এস আই লক্ষ্মৌ বেঞ্চে ৫৭৪ পাতার প্রতিবেদন জমা দেন। পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের এই প্রতিবেদন অযোধ্যা মামলার রায় দানে সবচেয়ে বড় ভূমিকা নিয়েছে। লক্ষণীয় বিষয় হল এ এস আই যখন অযোধ্য নিয়ে খনন চালিয়েছেন অটলবিহারী যখন প্রধানমন্ত্রী। আবার এর ভিত্তিতে অযোধ্যা মামলার রায় বেরিয়েছে যখন নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রী।
২০০৩ সালের প্রত্নতাত্ত্বিক খনন, তাঁদের সিদ্ধান্ত এবং তারই ভিত্তিতে পরবর্তীকালে রায়
দানের বিরুদ্ধে কিছু অভিমত এখানে উদ্ধৃত হল :
১] অযোধ্যা মামলার এই রায় দানে সবচেয়ে বড় ভূমিকা নিয়েছে পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের রিপোর্ট। খননের মধ্য দিয়ে মাটির বিভিন্ন স্তরে ছোট বড় পুরাকালের যা কিছু অবশিষ্টাংশ পাওয়া যায় তার মধ্য দিয়ে পুরাতাত্ত্বিক সেই যুগের নানা বিষয় নিয়ে আমাদের একটা ধারণা তৈরি করে দেন। তাই ইণ্ডিয়ান এভিডেন্স অ্যাক্ট অনুযায়ী ডিএনএ বা ফিঙ্গারপ্রিন্ট টেস্টের মতো পুরাতত্ত্বের আইনি পরিভাষায় কোনও ঘটনার ফ্যাক্ট বলতে যা বোঝায়, তা কখনই নয়। অযোধ্যায় এ এস আই প্রথম খনন কার্য করেছিল ১৮৬১ সালে ব্রিটিশ শাসনকালে। সেই সময়ে তার ডিরেক্টর জেনারেল আলেকজাণ্ডার কানিংহ্যামের নেতৃত্বে এই খননকার্য পরিচালিত হয়েছিল। রিপোর্টে তিনি তিনটে স্তূপের কথা উল্লেখ করেন। এদের দুটি বৌদ্ধস্তূপের মতো, অন্যটি বৌদ্ধ বিহারের মতো। এর পরের খনন কার্য ১৯৬৯ সালে। বারাণসী হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতাত্ত্বিক বিভাগ তার রিপোর্টে একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উল্লেখ করেছিলেন ; তা হল প্রাক মধ্যযুগীয় সময়ে এই অঞ্চলে বসতি ছিল। অযোধ্যার এই বিতর্কিত জায়গায় তৃতীয় খনন কার্যটি হয় ১৯৭৫-৮০ সালের মধ্যে। এ এস আইয়ের সেই সময়ের ডিরেক্টর বি বি লাল খনন করে যে রিপোর্ট জমা দেন, তাতে কোথাও স্তম্ভ পাওয়ার কথা নেই। অথচ সেই তিনি ১৯৯৯ সালে এসে আর এস এসের পত্রিকা ‘মন্থনে’ বলেন যে, বিতর্কিত স্থানে স্তম্ভের মতো কিছু পাওয়া গেছে। স্বভাবতই প্রশ্ন ওঠে উনি যদি খনন কার্যের সময়ে স্তম্ভ আবিষ্কার করে থাকেন, তাহলে রিপোর্টে উল্লেখ না করে ১৪ বছর বাদে আর এস এসের পত্রিকায় লিখলেন কেন ?
এরপর এলাহবাদ হাইকোর্টের তত্বাবধানে খনন কার্য চালানো হয়। আদালত প্রথমে জি পি আর করতে বলেন। জি পি আর হল পুরাতাত্ত্বিক খনন চালানোর এক অত্যাধুনিক পদ্ধতি। মাটির ভিতর রেডিও তরঙ্গ পাঠিয়ে দেখা হয় কোথাও বাধা
পাচ্ছে কি না। এরপর তার সূত্র ধরে খনন করে দেখা হয় সেই জায়গায় মাটির ভিতর কী আছে। প্রথমে ১৮৪টি বাধা পাওয়া গেলেও যখন খনন শুরু হল, তখন মাত্র ৩৯টি বিষয়কে নির্দিষ্ট করা হল। আশ্চর্যের বিষয়, এর মধ্যে একটিও স্তম্ভ পাওয়া না গেলেও জি পি আর-এ স্তম্ভের কথা উল্লেখ করা হল। এই বিষয় নিয়ে প্রশ্ন এমন উঠল যে এ এস আই জানাল, জি পি আর রিপোর্ট পরস্পরবিরোধী, তার উপর নির্ভর করা যাচ্ছে না।
এরপরে হাইকোর্টের নির্দেশে ড. বি আর মণিকে প্রধান হিসেবে নিযুক্ত করে এ এস আই ‘রামলালা বিরাজমান’এর চৌহদ্দির চারপাশে ১০ ফুট ছেড়ে খনন কার্য শুরু করে এবং ৫৭৪ পাতার রিপোর্ট হাইকোর্টে দাখিল করে।
এ এস আইএর রিপোর্টটি আগাগোড়া পড়লে দেখা যাবে যে সেটি ভ্রান্ত ও অনির্ভরযোগ্য। শুধু তাই নয়, আদালতের নির্দেশে ওই খনন কার্য চালানো হলেও প্রথম থেকেই ধরে নেওয়া হয়েছিল যে মাটির নিচে একটি হিন্দু মন্দির আছে এবং সেটি রামলালার। কোনও পূর্ব ধারণার ভিত্তিতে অনুসন্ধানকে আর যাই হোক, বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান বলা যায় না। এই রিপোর্টেও একটা মনগড়া ধারণাকে প্রমাণ করার জন্য যা যা করা দরকার করা হয়েছে, যা যা বলার দরকার রিপোর্টে তা বলা হয়েছে। যে যে বিযয় এই পূর্ব নির্ধারিত বিযয়ের সঙ্গে মেলে না, তাকে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয় নি। যেমন পশুর হাড়, চিত্রিত পাত্র, গ্লেজেড টাইলস পাওয়া গিয়েছিল, কিন্তু তা রিপোর্টে উল্লেখ করা হয় নি। ড. মণির নেতৃত্বে এ এস আই প্রথম থেকেই পুরাতাত্ত্বিক খনন কার্যের সাধারণ নিয়মনীতির কোনও কিছুই মেনে চলেন নি। শুধু তাই নয়, খনন কার্য কীভাবে চালানো হবে সে সম্বন্ধে এলাহবাদ হাইকোর্টের নির্দেশও মানা হয় নি। খনন কার্যের প্রক্রিয়া নিয়ে এমন অভিযোগ আসতে থাকায় এলাহবাদ হাইকোর্ট বাধ্য হয় ড. বি আর মণিকে এই খননকারী দলের প্রধানের পদ থেকে সরিয়ে দিয়ে নতুন কাউকে নিয়োগের জন্য এ এস আই-এর ডিরেক্টর জেনারেলকে নির্দেশ দিতে।
এ এসাই ৯০টি ট্রেঞ্চ খনন করেছিল এবং এর রিপোর্ট কোর্টে জমা দেওয়া হয়েছিল। ২২মে থেকে ৫ জুন ২০০৩এর রিপোর্টে লেখা হল ৩নং ট্রেঞ্চ খনন করে স্তম্ভ পাওয়া গেছে। অথচ কী আশ্চর্য দেখুন, ৩নং ট্রেঞ্চটির খনন কার্য শুরু হয়েছিল ৮ জুলাই,২০০৩। অর্থাৎ ৮ জুলাই খনন করে কী পাওয়া যাবে তা এক মাস আগেই এ এস আই তার রিপোর্টে উল্লেখ করে দিয়েছেন। এ যেন রাম না জন্মাতে রামায়ণ লেখার মতো ঘটনা। এ এস আইএর রিপোর্টে স্তম্ভ পাওয়ার কথা বলা হয়েছে। খনন দেখছিলেন এমন প্রত্নতাত্ত্বিকেরা অনেকেই তখন অভিযোগ করেছিলেন এধার-ওধার থেকে পাওয়া ইট জড়ো করে স্তম্ভের তত্ত্ব খাড়া করা হয়েছে। সেই স্তম্ভ কোনভাবেই ভারবাহী স্তম্ভ নয়।
মজার কথা হল,৫৭৪ পাতার এ এস আইএর রিপোর্টের কোথাও বলা হয় নি রাম মন্দিরকে ধ্বংস করেই বাবরি মসজিদ তৈরি হয়েছে। স্ববিরোধিতায় ভরা এই রিপোর্টের কোথাও মন্দিরের অস্তিত্বের কোনও উল্লেখ না থাকলেও একদম শেষের অধ্যায়ে রিপোর্টের সংক্ষিপ্তসার পরিচ্ছেদে হঠাৎ করে মন্দিরের উল্লেখ করা হয়েছে। মজার বিষয় হল, এর আগের প্রতিটি অধ্যায়ের শেষে যিনি লিখেছেন তাঁর সই থাকলেও শেষের অধ্যায়টি কে লিখেছেন, তা জানা যায় না। সইহীন এরকম এআ অধ্যায়কে পুরাতত্ত্বের নিয়মানুযায়ী সঠিক তথ্য বলে ধরা হয় না। বোঝাই যাচ্ছে এটি বিকৃত। সূরজ ভান, আথার আলি, রামশরণ শর্মা, ডি এন ঝা, রোমিলা থাপারের মতো ইতিহাসবিদেরা খনন কার্যের সময় অযোধ্যায় গিয়েছিলেন। সমস্ত পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শন খতিয়ে দেখেছিলেন। তাঁরাও এ দাবিকে উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন, মসজিদের নিচে হিন্দু মন্দিরের অস্তিত্ব নেই। সুপ্রিম কোর্ট বলেছে অ-ইসলামিক নিদর্শন পাওয়া
গেছে বলে এ এস আই বলেছে। কিন্তু সেটা কী তা স্পষ্ট নয়। বিশেষজ্ঞরা নিদর্শনগুলির কালনির্ণয় নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। ঐতিহাসিক ডি এন ঝা বলেছেন, বিচারবিভাগের উচিত ছিল রায়ের আগে ইতিহাসবিদ ও বিশেষজ্ঞদের অভিমত নেওয়া। বিশ্বাসের ভিত্তিতে যুক্তিকে পেছনে ঠেলে দেওয়া সমাজের পক্ষে অকল্যাণকর।ফলে এইরকম একটি রিপোর্টকে ভিত্তি করে সুপ্রিম কোর্টের এই রায় আইনের সকল বিধি-বিধান এবং বিচার ব্যবস্থার সকল নৈতিকতাকে উপেক্ষা করে কার্যত ন্যায় বিচারের প্রহসন ঘটিয়েছে। [গণদাবী ২২মে—৫জুন, ২০০৩]
২] এ এস আই অযোধ্যার জমিতে যখন খনন করছিল, সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডের তরফ থেকে দুই পুরাতাত্ত্বিক সুপ্রিয়া ভার্মা এবং জয়া মেনন পর্যবেক্ষক হিসাবে তখন উপস্থিত ছিলেন। ২০১০ সালে ‘ইকনমিক অ্যান্ড পলিটিক্যাল উইকলি’ পত্রিকায় লেখা এক নিবন্ধে ওঁরা জানান, কেন ওঁরা এ এস আইএর সিদ্ধান্তের সঙ্গে সহমত হতে পারেন নি। তার সব থেকে বড় কারণ, ওঁদের মনে হয়েছিল, এ এস আইএর কিছু পুরাতাত্ত্বিক এমন এক পূর্ব সিদ্ধান্ত নিয়ে খননের কাজ শুরু করেছিলেন যে মসজিদের তলায় মন্দির আছে। তাঁদের কাজ সেটা খুঁজে বের করা। যে পুরানো পদ্ধতিতে কাজ করছিল এ এস আই তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন ভার্মা ও মেনন। তারপরেও যে আদালতে এ এস আইএর রিপোর্ট নিয়ে কেউ চ্যালেঞ্জ করেন নি, তার কারণ সম্ভবত ভারতে যে কোন পুরাতাত্ত্বিক কাজ করার ক্ষেত্রে এ এস আইএর সর্নময় কর্তৃত্ব। তাই তাদের গবেষণার পদ্ধতি ও ফলাফল নিয়ে কেউ প্রশ্ন তোলে না।
... ভার্মার যুক্তি : মসজিদের নিচে মন্দিরের অস্তিত্বের পক্ষে এ এস আই পশ্চিমের দেওয়ালের কথা বলেছে। মন্দিরের নয় মসজিদের পশ্চিম দিকেই দেওয়াল থাকে যার সামনে বসে নমাজ পড়া হয়। পঞ্চাশটি স্তম্ভ দিয়ে তৈরি এক ভিতের কথা বলেছে এ এস আই, যা নাকি মন্দিরের অবশেষ। এ দাবি ঠিক নয়। একাধিকবার
আদালতকে জানানো হয়েছিল যে যেগুলোকে ভাঙা স্তম্ভ বলা হচ্ছে সেগুলো আসলে জমে থাকা ইট, যার ভেতর মাটি জমা হয়েছিল। এ এস আই ১২টি ভাঙা টুকরো নমুনা হিসাবে দেখিয়ে বলেছে এসব ভাঙা মন্দিরের অংশ। এই ভগ্নাংশগুলি মাটি খুঁড়ে পাওয়া নয়, মসজিদের মেঝেতে জমে থাকা ধ্বংসস্তূপ থেকে সেগুলি সংগ্রহ করা।[ আজকাল, ১৬ অক্টোবর, ২০১৯]
(মতামত লেখকের নিজস্ব)
(লেখক সিনিয়র ফেলোশিপপ্রাপ্ত গবেষক)
এর আগের পর্বগুলি পড়ুন:
রাম, রামায়ণ ও বাবরি রাজনীতি/১৮
রাম, রামায়ণ ও বাবরি রাজনীতি/১৭
রাম, রামায়ণ ও বাবরি রাজনীতি/১৬
রাম, রামায়ণ ও বাবরি রাজনীতি/১৫
রাম, রামায়ণ ও বাবরি রাজনীতি/১৪
রাম, রামায়ণ ও বাবরি রাজনীতি/১৩
রাম, রামায়ণ ও বাবরি রাজনীতি/১২
রাম, রামায়ণ ও বাবরি রাজনীতি/১১
রাম, রামায়ণ ও বাবরি রাজনীতি/১০
রাম, রামায়ণ ও বাবরি মসজিদ নিয়ে রাজনীতির নেপথ্যে/১
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct