আহমদ মতিউর রহমান, ঢাকা: নিরাপত্তা হেফাজতে থাকা বাংলাদেশি লেখক মুশতাক আহমেদের কারাগারে মৃত্যুর ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। আগে থেকেই কতৃত্ববাদী শাসকের তকমা আঁটা আওয়ামী লীগ সরকারের জন্য এই ঘটনা নতুন অস্বস্তি তৈরি করেছে। বাংলাদেশে ১৩ টি ইউরোপীয় দেশের রাষ্ট্রদূতগণ এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন। মুশতাকের মৃত্যু নিয়ে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। এ বিষয়ে সংগঠনটির এশিয়া বিষয়ক পরিচালক ব্রাড এডামস বলেছেন, মুশতাকের মৃত্যু বাংলাদেশের নাগরিক সমাজের মধ্যে একটি শীতল বার্তা পাঠিয়েছে। ব্রাড এডামস আরো বলেছেন , শান্তিপূর্ণ সমালোচনার কারণে এরকম আচরণ অবিলম্বে বন্ধ করাতে সরকারকে বাধ্য করা উচিত। তিনি বলেন, ফেসবুকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে নিয়ে স্যাটায়ার বা ব্যঙ্গ করার সমতুল্য হতে পারে না একটি মৃত্যু।
গত ২৫ শে ফেব্রুয়ারি জেলের ভিতর নিরাপত্তা হেফাজতে মারা যান মুশতাক আহমেদ। করোনা ভাইরাস মহামারি নিয়ে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের সমালোচনা করে ফেসবুকে পোস্ট দেয়ার কারণে বিনা বিচারে তাকে ৯ মাস জেলে আটকে রাখা হয়। গত বছর মে মাসে লেখক মুশতাক আহমেদ, কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোরকে গ্রেপ্তার করে কর্তৃপক্ষ। মুশতাক করোনা মহামারিতে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপে দুর্নীতি নিয়ে কিশোরের আঁকা কার্টুন শেয়ার দিয়েছিলেন। বার বার জামিন চাওয়া হলেও তাকে জামিন দেয়া হয় নি। তাকে কারাগারে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ সমাবেশ করে প্রতিবাদ জানিয়েছে বিভিন্ন সংগঠন। প্রতিবাদমুখর হয়ে উঠেছেন লেখক, সাংবাদিক, বিভিন্ন ছাত্র ও রাজনৈতিক সংগঠন। তারা মুশতাক হত্যার বিচার চেয়ে অবিলম্বে বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি জানিয়েছে। আইনটিতে ত্রুটি থাকার কথা স্বীকার করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা গওহর রিজভি। এদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল বলেছেন, তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ব্যাক্তিকে ক্ষতিগ্রস্ত করার সুর্দিদিষ্ট অভিযোগ রয়েছে। সরকার বিষয়টি নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct