আপনজন ডেস্ক: বাম কংগ্রেসের সঙ্গে জোট নিয়ে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হওয়ায় একলা চলো রে পথে এগনোর হুঁশিয়ারি দিলেন পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকী। কলকাতা প্রেস ক্লাবে ‘ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট’ নামে নতুন দল ঘোষণার পর মঙ্গলবার প্রথম শহরে মিটিং করেন। ধর্মতলার ওয়াই চ্যানেলের মিটিংয়ে মূল বক্তব্য ছিল জোট প্রসঙ্গ। বলা যায়, এদিন আব্বাস সিদ্দিকীর মিটিংয়ের মূল উদ্দেশ্যে ছিল কংগ্রেস ও বামেদেরকে কড়া বার্তা দেওয়া। তাই মিটিং চলাকালীন বেশ কয়েকবার আব্বাস সিদ্কিী জোট নিয়ে হুঁশিয়ারি দেন। যদিও তিনি তিনি এও বলেন, আশাকরি জোট হবে। তবে জোট ভেঙে গেলে সেক্ষেত্রে আইএএসএফের কাছে একলা চলো ছাড়া উপায় থাকবে না। দেরি যে তাঁর পছন্দ নয়, মঙ্গলবার সে কথা সাফ জানিয়ে বামফ্রন্ট ও কংগ্রেসকে হুঁশিয়ারি দিলেন আব্বাস সিদ্দিকি।
তবে, বেশ কয়েকবার জোট নিয়ে আলোচনার পরও কংগ্রেস সিপিএমের সঙ্গে জোট ফয়সালা না হওয়ায় আব্বাস সিদ্দিকীর মধ্যে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটে। সেটাই ক্ষোভের কথা ঠারেঠোরে বোঝাতেই জোট নিয়ে সমঝোতার দ্রুত করার বার্তা দেন।
কিন্তু সূত্রের খবর, কংগ্রেস সিপিএম নেতৃত্ব আব্বাস সিদ্দিকীর দল যতগুলির আসন চাইছে তা নিয়ে তারা হতাশ। তাদের বক্তব্য একটা নতুন দল যাদের এখনও ঠিকভাবে সাংগঠনিক শক্তি গড়ে ওঠেনি তারা কী করে ৬০-৭০টা আসন চায়। আবার এই ৬০-৭০টি আসনে মধ্যে কংগ্রেস বা সিপিএমের যেমন জেতা আসন আছে তেমনি দ্বিতীয় স্থানে থাকা আসনও রয়েছে। ফলে নিজে হাতে আত্মসমর্পণ করতে চাইছে না কংগ্রেস। সিপিএমের একাংশও আব্বাসের সাংগঠনিক শক্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে বলে সুত্রের খবর। কংগ্রেস ও সিপিএমের একাংশের বক্তব্য, তাদের হিসেবে বড় জোর পাঁচটি আসন ছাড়া যেতে পারে। কিন্তু তা নির্ভর করছে কংগ্রেস ও সিপিএমের উপর। কিন্তু আব্বাসের দল তাদের পছন্দের আসনগুলির পেতে যাওয়ায় জোটের পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়াচ্ছে বলে বাম কংগ্রেস অস্বস্তিতে পড়েছে। তার উপর মিম নেতা আসাদউদ্দিন ওয়াইসির সঙ্গে জোট হচ্ছে কিনা তা নিয়ে আব্বাস সিদ্দিকী কোনও খোলসা করে কথা না বলায় আগােএখনই কংগ্রেস বা সিপিএমে জোটের পথে যেতে চাইছে না। মেটিয়াবুরুজে ওয়াইসির সভা ২৫ ফেব্রুয়ারি। তার পর আব্বাসের সঙ্গে ওয়াইসির দলের সম্পর্ক মেপে সাবধানে জোটের পথে এগোতে চাইছেন কংগ্রেস নেতারা। কারণ, কংগ্রেস হাইকমান্ড সাফ জানিয়ে দিয়েছেন আব্বাসের দল মিম-এর সেঙ্গে জোট করলে সেই জোটে থাকবে না কংগ্রেস।
পরিস্থিতি বুঝে তাই মঙ্গলবারের সভায় আব্বাস সিদ্দিকী ইঙ্গিত দেন, জোটে সাড়া না পেলে আদিবাসী সংগঠন সহ ছোট ছোট আঞ্চলিক দলগুলির সঙ্গে জোট করেই লড়বেন ভোটে। ওয়াই চ্যানেলে আব্বাসের বক্তব্যে ক্ষোভের সুর থাকলেও আপেক্ষায় রয়েছেন কংগ্রেস সিপিএম জোট ঘোষণা করেন কিনা। তাই চরম অনিশ্চিতের মধ্যে আব্বাসের দলের সঙ্গে বাম কংগ্রেসের জোট।
এদিনের মিটিং শেষে আপনজন সাংবাদিককে ফোনে আইএএসএফের চেয়ারম্যান নওশাদ সিদ্দিকী বলেন, সিপিএমের সঙ্গে কথা হয়ে রয়েছে জোট নিয়ে, শুধু ঘোষণার অপেক্ষায়। কিন্তু কংগ্রেসের সঙ্গে কোনও কথা হয়নি। ওয়াই চ্যানেলে সভার পর কোনও বার্তা আসেনি কংগ্রেসের পক্ষ থেকে।
উল্লেখ্য, এদিন ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের ডাকে কেন্দ্রীয় সরকারের কৃষি বিল বাতিলের দাবিতে ও পেট্রোল, ডিজেল ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে শিয়ালদহ থেকে ধর্মতলা ও হাওড়া থেকে ধর্মতলা দুটি মিছিল ধর্মতলা ওয়াই চ্যানেলে এসে জমায়েত হয়ে প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। তাতে পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন পীরজাদা বাইজিদ আমিন, সভাপতি সিমল সরেন, সামসুর আলি মল্লিক, লক্ষীকান্ত হাঁসদা, সঙ্গীতা চক্রবর্তী, কুতুবউদ্দিন ফাতেহি, হাজি ইব্রাহিম, অভিজিৎ মন্ডল, পার্থবসু মুখার্জি, সেখ নিজামুদ্দিন, আব্দুল গণি জমাদার, নাসিরুদ্দিন মীর প্রমুখ।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct