কুতুবউদ্দিন মোল্লা ও বাবলু প্রামাণিক: বিজেপিকে পরোক্ষে গুটখাখোর বলে অভিহিত করলেন তৃণমূল কংগ্রেস যুব সভাপতি তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলপির ঢোলাহাটের জনসভায় অভিযেক নাম না করে অমিত শাহ, কৈলাস বিজয় বর্গীয়দেরকে বিধানসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে বারে বারে বাংলায় আসা ও ক্ষমতা দখলের স্বপ্ন দেখা নিয়ে সরব হন। অভিষেক বলেন, তৃণমূল কর্মীদের লড়াই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মুখ্যমন্ত্রী করার জন্য নয়। বহিরাগতদের বাংলা থেকে বিতাড়িত করার জন্য এই লড়াই।
তবে উত্তরপ্রদেশ–সহ অন্য রাজ্যের বহিরাগত নেতারা বাংলায় এসে গুটখার থুতু ফেললেও সেই থুতুতে বাংলার লোহায় জং ধরবে না বলে মন্তব্য করেন।
অভিষেকের দাবি, বহিরাগত নেতারা এ রাজ্যে এসে খাওয়া-দাওয়া করবেন। আর ভোটের ফল বেরনোর পর তাদেরকে প্যাক করে গুজরাত ও উত্তরপ্রদেশে পাঠিয়ে দেবে বাংলার মানুষ।
নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন চালূ নিয়ে ঠাকুরনগরের সভা থেকে অমিত শাহের বক্তব্যকে খণ্ডন করে অভিষেক বলেন, কোনদিন সিএএ লাগু হবে না। ২০১৯ সালে সংসদে এই আইন পাশ হয়েছিল। কিন্তু আজও লাগু হল না। এখন বলছে করোনা ভ্যাকসিন শেষ হলে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। মতুয়াদের বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। মতুয়ারা এদেশের নাগরিক। কারণ তাঁদের ভোটে তৈরী হয়েছে এদেশের সরকার ও প্রধানমন্ত্রী। কেন্দ্র ও রাজ্যের একই সরকার ও সোনার বাংলা স্লোগান নিয়েও অভিষেক কটাক্ষ করেন। তিনি বলেন,‘ বিজেপি নেতারা বলছেন ডবল ইঞ্জিন সরকার। বাংলার একটি মাত্র ইঞ্জিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর বিজেপির ৫০ টি ইঞ্জিন লাগাতে হয়েছে একটি ইঞ্জিনকে হারাতে। আগে সোনার উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা, গুজরাত করে দেখাও। পরে সোনার বাংলা গড়বে। দিলীপ ঘোষ মা দুর্গাকে অপমান করেছেন। যারা মহিলাদের অসম্মান করেছেন, তাদের যোগ্য জবাব দেবেন মানুষ।
রাজ্যের সামাজিক প্রকল্পগুলিই আগমী নির্বাচনে তৃণমূলকে ফের ক্ষমতায় নিয়ে আসবে বলে জানান অভিষেক। তিনি বলেন, ‘এ রাজ্যে খাদ্য, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাসস্থান সম্পর্ণ বিনামূল্যে পাওয়া যায়। ভারতের কোন রাজ্যে এতগুলি প্রকল্প নেই। স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে ১০ কোটি মানুষ উপকৃত হবেন। আর কেন্দ্রের আয়ুষ্মান প্রকল্পে মাত্র এক কোটি মানুষ সুবিধা পাবেন। তাও সবাই পাবেন না। আগামী নির্বাচনে তৃণমূল ২৫০ আসন নিয়ে ফের ক্ষমতায় ফিরবে বলে প্রত্যয়ের সঙ্গে অভিষেক জানান। উল্টোদিকে বিজেপি দু’অঙ্কে পৌঁছতে পারবে না বলে তিনি সাফ জানিয়ে দেন।
তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠা প্রসঙ্গে অভিষেক বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যদি এতটুকু কোনও প্রমাণ থাকে তোমাদের কাছে, তাহলে ইডি-সিবিআই দিয়ে চমকাতে হবে না। একটা ফাঁসির মঞ্চ করবেন, আমি মৃত্যুবরণ করব’।
এদিন বেলা দু’টো নাগাদ হেলিকপ্টারে তিনি ঢোলাহাটে আসেন। সভা সেরে তিনি সোনারপুরের রোড-শোর জন্য বেরিয়ে যান। কামালগাছি মোড় থেকে সোনারপুর স্টেশন এলাকায় পথসভা করে। এই পথসভা প্রধান উদ্যোক্তা ছিলেন সোনারপুর উত্তর বিধানষভার বিধায়ক ফিরদৌসী বেগম।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct