আপনজন ডেস্ক: এখন অমীমাংসিত রয়েছে গিয়েছে আফগান শান্তি। আফগান সরকার-তালিবানের মধ্যে চুক্তি সই হলেও চুড়ান্ত পর্যায় পৌঁছয়নি ক্ষমতার বন্টন। তাই গত ১২ তারিখ দোহায় ফের একবার শান্তি আলোচনায় বসেছে সব পক্ষ। কিন্তু সেই বৈঠকের মধ্যে ফের অপ্রত্যাশিত বন্দুকবাজ হামলার শিকার হল কাবুল। তবে এবার বন্দুকবাজদের গুলির নিশানা হলেন সুপ্রিম কোর্টের দুই মহিলা বিচারপতি। মাত্র দুদিন আগে আমেরিকা আফগান মাটি থেকে ২৫০০ হাজার সেনা প্রত্যাহার করার কথা ঘোষণা করে ছিল। তাতে চুক্তি অনুযায়ী এগোচ্ছি সমস্ত কিছু। তবে হামলার পর বৈঠক কিছুটা ধাক্কা খাবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
রবিবার সকালে আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে হামলার ঘটনাটি ঘটে। একই সঙ্গে বিচারপতিদের গাড়ির চালকও আহত হয়েছেন বলে জানাগিয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র আহমেদ ফাহিম কায়িম এই ঘটনাকে 'দুর্ভাগ্যজনক' বলে ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি বলেন, এই ঘটনা অত্যন্ত হাইপ্রোফাইল ঘটনা। আমরা দুজন অভিজ্ঞ মহিলা বিচারপতিকে হারালাম। তাদের গাড়ির চালক হামলা হাত হয়েছেন। এদিন ওই দুই বিচারপতি সুপ্রিম কোর্টেই আসছিলেন। কিন্তু মাঝ পথে বন্দুকবাজদের হামলার নিশানা হলেন তারা। তিনি আরও বলেন, দেশে মোট ২০০ জনের মত মহিলা বিচারক রয়েছেন।২০১৭ সালে কাবুল সুপ্রিম কোর্টে হামলা চালানো হয়ে ছিল। সেই সময় ২০ জন কর্মী সহ একজন নিহত হন ওই হামলায়।
ইতিমধ্যে তালিবানের তরফ থেকে এই হামলার দায় অস্বীকার করা হয়েছে। তাই বিশেষজ্ঞদের মতে, এই হামলা পিছনে আইএসের হাত থাকতে পারে। তবে সেই তরফ থেকে এখনও কোনও বার্তা আসেনি। তাদের দাবি আফগান শান্তি চুক্তি বানচাল করতে আইএস আফগান মাটিতে অশান্তি ছড়িয়ে চলেছে। আফগান শান্তি চুক্তি নিয়ে বৈঠকের শুরু থেকেই আইএস অশান্তি জিয়ে রাখতে চাইছে আফগান মাটিতে। কারণ এই বৈঠকে আফগান সরকার ও তালিবানের মধ্যে ক্ষমতা বন্টনের কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু আইএস তাদের সন্ত্রাস জিইয়ে রাখতে এই চুক্তি হতে দিতে চায়না। ফলে বারবার শান্তিচুক্তি বিঘ্নিত হচ্ছে। জানা গিয়েছে, গত কয়েক মাসে আফগানিস্তানের বিভিন্ন স্থানে হিংসার ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছ।
সুপ্রিম কোর্টের মহিলার বিচারপতিদের হামলার ঘটনাকে আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি বলেছেন, "সন্ত্রাস, আতঙ্ক ও অপরাধ" ছড়িয়ে আফগানিস্তানের সমস্যার সমাধান করা যাবে না। তালেবানের উদ্দেশ্যে "স্থায়ী যুদ্ধবিরতি" মেনে নিতে অনুরোধ করেছে। তিনি জানিয়েছে, বিশেষ করে রাজধানী কাবুলে ভীতি প্রদর্শন করতে গত মাসগুলিতে সরকারী কর্মী, সাংবাদিক এবং নেতাকর্মীদের লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। তালেবানরা কয়েকটি হামলায় জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেছে। তবে তাদের দাবি কোনও গুরুত্বপূর্ণ সরকারী ব্যক্তিত্ব যদি তাদের বিরুদ্ধে থাকে তাহলে সংগঠনের যোদ্ধারা তাদের "নির্মূল" করতে থাকবে। ওয়াশিংটন সেনাবাহিনী প্রত্যাহার করার ঘোষণার সঙ্গেই দোহায় শান্তি আলোচনায় জটিল বাড়ছে। উভয় পক্ষের সূত্রের দাবি, যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট-নির্বাচিত জো বাইডেন দায়িত্ব নেওয়ার পর আফগানিস্তানের প্রতি তাঁর নীতিগুলি প্রকাশিত হলে আলোচনায় অগ্রগতি হবে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct