কিবরিয়া আনসারী, ডোমকল: সমাজের পিছিয়ে পড়া শিক্ষিত ছেলে-মেয়েদের ডব্লিউবিসিএস অফিসার হওয়ার অনুপ্রেরণা যোগাচ্ছে ডোমকলের মহকুমা আরক্ষা আধিকারিক ফারুক মহম্মদ চৌধুরী। সমাজ সচেতনদের দেখানো পথ অনুসরণ করে ডোমকলের প্রত্যন্ত গ্রামের শিক্ষিত ছেলে-মেয়েরা এখন ডব্লিউবিসিএস অফিসার হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন।
সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উন্নতির সঠিক প্রয়োগ ও তাদের যথাযোগ্য সুযোগ দেওয়ায় তাদের স্বপ্ন বাস্তবে রূপ দিচ্ছেন মহকুমা পুলিশ আধিকারিক।সকলকে চমকে দিয়ে ডোমকলের মহকুমা আরক্ষা আধিকারিক ফারুক মহম্মদ চৌধুরী এলাকার শিক্ষিত বেকার যুবক যুবতীদের পাশে দাঁড়িয়ে নজির তৈরি করেছেন।
এক ছাত্র মুরসেলিম সেখ বলেন, সপ্তাহে দু’দিন নিয়ম করে রানিনগর ও ডোমকলে চাকরির প্রতিযোগিতার পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি ও টিপস দিচ্ছেন স্যার। মহকুমা আরক্ষা আধিকারিকের অফিসের ছাদেই করানো হচ্ছে কোচিং। আমাদের মত পিছিয়েপড়া ছেলে-মেয়েদের জন্য স্যারের উদ্যোগ প্রশংসনীয়।
বিগত কয়েক বছরে ডোমকলের বেশ কয়েকজন আইপিএস ও ডব্লিউবিসিএস অফিসার বিভিন্ন পদে নিযুক্ত হয়েছেন। ড: নজরুল ইসলাম, সাফিন বিন রহমান, আবু নূর হোসেন, দেলুয়ার হোসেনরা ডোমকলের মাটি থেকেই উঠে গিয়েছেন। তাদের দেখেই অনুপ্রেরণা জেগেছে মনে। নাজমিনা, তনুজা, মুরসেলিম, মাফিকুল সকলেই ডোমকলের প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের দরিদ্র ও পিছিয়েপড়া সমাজের ছেলে-মেয়ে। তাদের চোখে এখন আধিকারিক হওয়ার স্বপ্ন।
অর্থের কারণে কোচিং নিতে পারেননি ডোমকলের তনুজা খাতুন। মহকুমা পুলিশ আধিকারিকের ডব্লিউবিসিএস কোচিং সেন্টারে পড়ার সুযোগ পেয়ে তনুজা জানান, ডোমকলের প্রাক্তন মহকুমা আরক্ষা আধিকারিক মাকসুদ হাসানের সময় ডব্লিউবিসিএস কোচিং সেন্টার চালু হয়েছিল। মাঝে তা বন্ধ হয়ে যায়। ডোমকলে দায়িত্বভার নেওয়ার পর ফের ফারুক স্যারের উদ্যোগে কোচিং সেন্টার চালু হয়েছে। পুঃণরায় পড়ার সুযোগ পেয়ে ভালো লাগছে। জানা গিয়েছে, দুই কোচিং সেন্টারে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যাও কম নয়। ডোমকলে ইতিমধ্যেই সংখ্যাটা ৫০ ছাড়িয়েছে। রানিনগরেও প্রায় ১০০ জন। শুধু আশেপাশের এলাকা থেকেই নয়, খবর পেয়ে দূর–দূরান্ত থেকেও বেকার যুবক–যুবতীরা প্রতি শনি ও রবিবার তাঁর কাছে ছুটে আসছেন। তাঁদেরকে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় কীভাবে সফল হবেন তা হাতে কলমে শেখাচ্ছেন তিনি।
ডোমকলের আরক্ষা আধিকারিক ফারুক মহম্মদ চৌধুরী বলেন, ছোটবেলা থেকেই অত্যন্ত কষ্টের মধ্য দিয়ে পড়াশোনা করতে হয়েছে। তাই অর্থের অভাবে যাদের পড়াশোনা হয় না, তাদের পাশে থাকার চেষ্টা করি। সম্পূর্ণ বিনা খরচে পিছিয়েপড়া, দরিদ্র ছেলে-মেয়েদের কোচিং করানো হচ্ছে। তার কোচিং সেন্টার থেকে আধিকারিক হয়ে বাংলার বুকে সুস্থ সমাজ গড়তে এরা এগিয়ে আসবে বলেই মনে করেন ফারুক মহম্মদ চৌধুরী।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct