সাদ্দাম হোসেন মিদ্দে ও জুলফিকার মোল্যা, ভাঙড় ও মিনাখাঁ: রাজনৈতিক লড়াইয়ে এবার সরগরম দুই চব্বিশ পরগনা সীমান্ত। বুধবার সকালে পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকীর সভার উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলেন ভাঙড়ের অনুগামীরা। যাত্রা পথে বাসন্তী হাইওয়ের উপরে ভাঙড়ের চণ্ডীপুরে আব্বাস অনুগামীদের আটকানোর চেষ্টা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের তীর তৃণমূলের দিকে।
অনুগামীদের আটকানোর খবর পেয়ে বেলা ১১.৩০টার দিকে ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছান আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের কর্ণধার পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকী। আব্বাস অনুগামীরা এদিন ২ জন দুষ্কৃতিকে ধরে ভাঙড় থানার পুলিশের হাতে তুলে দেন বলে আব্বাস ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে। পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে ২ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। এই ঘটনার সঙ্গে শাসক দল জড়িত তাকার অভিযোগ ওঠায় ক্যানিং পূর্বের তৃণমূল বিধায়ক সওকাত মোল্লার মতামত জানতে ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। ম্যাসেজ করা হলেও উত্তর দেননি। ফলে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সম্পর্কে সওকাতের কি প্রতিক্রিয়া তা জানা সম্ভব হয়নি।
তবে, অনুগামীদের আটকে রাখার অভিযোগের মধ্যেই এদিন হাজার হাজার মানুষ আব্বাস সিদ্দিকীর সভায় উপস্থিত হন বলে স্থানীয় আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের কর্মীদের দাবি। দুপুর ১ টার দিকে আব্বাস সিদ্দিকী সভামঞ্চে উপস্থিত হন হয়ে শাসক দল ও পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন। এদিনের মঞ্চ থেকে হিন্দু-দলিত, আদিবাসী, মুসলিম সমাজের পিছিয়ে পড়া জাতি তাঁর পাশে আছে বলে দাবি করেন। তিনি আবারও বিজেপি বিরোধী জোটের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন।
তবে আব্বাস সিদ্দিকী অনুগামীদের ঘর ভাঙা হয় বলে অভিযোগ তুলে বলেন, আমার ভাইবোনের ঘর ভাঙ্গা হয়েছে। অবিলম্বে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে প্রসাশন যদি কড়া ব্যবস্থা না নেয় তবে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় মিনাখাঁ থানা ঘেরাও করব।
ঘটনার পর আব্বাস অনুগামীরা ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে শ্লোগান দিতে থাকেন। দুষ্কৃতিদের গ্রেফতারের দাবিতে সরব হন। আব্বাস সিদ্দিকীকে এদিন অনুগামীরা ভাঙড়ের ঘটকপুকুর থেকে মিনাখাঁর পিপুলদহতে মানববন্ধন করে নিয়ে যান। এদিন আব্বাস সিদ্দিকী অনুরাগীদের পুষ্প বৃষ্টিতে ভেজেন।
ভাঙড়-২ আহলে সুন্নাত আল জামাতের সম্পাদক রাহিনুর ইসলাম বলেন, ‘এদিন চণ্ডীপুরে ২ জন দুষ্কৃতির হাতে হাতে দেখতে পিস্তল পাই । তারা তৃণমূল সমর্থক বরে পরিচিত। ভাঙড় থেকে মিনাখাঁর সভার উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলেন। আমরা তাদের ধরে ভাঙড় থানার পুলিশের হাতে তুলে দেই।’ ভাঙড় থানার পুলিশ অবশ্য আটক দুই ব্যক্তির কাছে পিস্তল থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
প্রবল শীতেও রাজনৈতিক কারণে এমনিতেই সরগরম ছিল দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার ভাঙড়। শীত কিছুটা হলেও উধাও। প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়মে বাড়ছে পারদ। বসন্ত আসার অপেক্ষায় প্রহর গুনছে বাংলা। একুশের নির্বাচন আসন্ন। তাই রাজনৈতিক আবহাওয়াতেও পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ভোট আসা মানে চারিদিকে গন্ডগোল। এটাই যেন প্রকৃতির নিয়মের মতো স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে। এবার শুধু ভাঙড় নয় সরগরম হয়ে উঠেছে দুই চব্বিশ পরগনা জেলার সীমান্তবর্তী এলাকা। আবহাওয়ার পারদের সঙ্গে তাই পাল্লা দিয়ে চড়ছে রাজনীতির পারদও।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct