ফৈয়াজ আহমেদ: জাতীয় পাখি দিবস আজ। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ এই দিনটি জাতীয় পাখি দিবস হিসাবে পালন করে। যার মধ্যে অন্যতম আমেরিকা। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এখনো ৯৯০০ থেকে ১০০০০ প্রজাতির পাখি আছে। এদের কেউ আকাশে বেশিরভাগ সময়টা কাটায়, কেউ বা মাটিতে চড়ে বেড়ায়। কেউ জলচর তো কেউ পরিযায়ী, কেউ পতঙ্গভোজী তো কেউ ফলভোজী বা মাংসখেকো। বৈচিত্র অনেক।
দাড়িওয়ালা শকুন
দাড়িওয়ালা শকুনের কাছে পর্বত খুবই পছন্দের জায়গা। ভারতের হিমালয় থেকে আফগানিস্তান, দক্ষিণ ইউরোপের আল্পস থেকে ককেশাস হয়ে জাগরোস পর্বতমালা, আরব ভূমি, ইথিওপিয়ার পার্বত্য অঞ্চল এবং উত্তর আফ্রিকার আটলাস পর্বতমালা; দেড়েল শকুন দেখতে হলে এদের যেকোনো একটিতে গেলেই হবে। অন্য প্রাণীরা যখন মৃত পশুর মাংস খেয়ে শেষ করে ফেলে, তখন এরা জুড়ে বসে। হাড়গোড় এদের প্রধান খাদ্য। আকারে এরা বিরাট, প্রায় ৪ ফুট লম্বা, দুই ডানা মেলে ধরলে মোট বিস্তৃতি দাঁড়ায় নয় ফুটেরও বেশি। গ্রীক পুরাণে এবং বাইবেলেও এদের উল্লেখ দেখা যায়।
হোয়াটজিন
হোয়াটজিন দেখতে পাওয়া যায় দক্ষিণ আমেরিকার উত্তরাংশের জঙ্গলে। ওরিনকো আর আমাজন নদীর তীরবর্তী ঘন জঙ্গলে বাস করে এরা। প্রধান খাদ্য গাছের পাতা, তবে ফলফুলও খেয়ে থাকে।
কাকাপো
কাকাপো পৃথিবীর সবচেয়ে ভারী টিয়া পাখি। থাকে নিউজিল্যান্ডে। কাকাপো আর দশটা টিয়ার মতো না। এরা ফুট দুয়েক লম্বা, ওজন চার কেজির মতো এবং নিশাচর। এই পাখিটি বর্তমানে বিলুপ্তির পথে। এরা বহুদিন বাঁচে। নব্বই বছর পর্যন্ত বাঁচবার রেকর্ডও আছে।
গ্রেটার হানিগাইড
২০ সেন্টিমিটারের এই পাখিটা দেখতে অত্যন্ত সাদামাটা। এর মূখ্য খাবার হচ্ছে মধু, মোম এবং মৌমাছির লার্ভা। পূর্ব আফ্রিকার বোরান জাতের লোকেরা হানিগাইডের সাহায্যে মধু সংগ্রহ করেন। মধু নেওয়া হয়ে গেলে তারা চাকের একটা বড় অংশ পাখিটির জন্য বাইরে বের করে রাখেন।
ব্লু টিট
পশ্চিম এশিয়া আর ইউরোপ জুড়ে প্রায় সবখানেই ১২ সেন্টিমিটারের এই ছোট্ট পাখিটি দেখা যায়। এই পাখির বাসায় প্রচুর পোকামাকড় বিশেষ করে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ দেখা যায়। তাই পাখিগুলো ল্যাভেন্ডার বা মিন্টের মতো সুগন্ধী গাছের পাতা কুড়িয়ে নিয়ে এসে বাসায় মজুত করে। ফলে পাখির বাচ্চার স্বাস্থ্য ভাল থাকে, বাসাও থাকে ব্যাকটেরিয়ামুক্ত।
ক্যাসোয়ারি
উদ্ভট পাখিদের কথা উঠলে ক্যাসোয়ারিকে তালিকায় রাখতেই হবে। ফুট ছয়েক উচুঁ, পঞ্চাশ কেজির বেশি ওজন নিয়ে ক্যাসোয়ারি নিউ গিনির গহীন অরণ্যে চড়ে বেড়ায়। ক্যাসোয়ারি মূলত ফল, পাতা খেলেও সুযোগ পেলে ছোটখাট প্রাণী শিকার করতে দ্বিধা করে না। একেকটা ক্যাসোয়ারি প্রায় বছর চল্লিশেক বা তারও বেশি দিন বাঁচে। এরা উড়তে পারে না। ক্যাসোয়ারির তিনটি প্রজাতি আছে।
অয়েলবার্ড
অয়েলবার্ড এর দেখা মেলে গোটা দক্ষিণ আমেরিকা আর ক্যারিবীয় অঞ্চলে। পাখিগুলো নিশাচর, এরা গুহায় বাস করে এবং ফলভোজী। বাদুড়ের মতোই এরাও রাতের বেলা খাবারের সন্ধানে বের হয় এবং শব্দ তরঙ্গ ব্যবহার করে উড়ে বেড়ায়। এছাড়া এরা অন্ধকারে বেশ দেখতেও পায়। অয়েলবার্ডদের প্রধান খাদ্য হচ্ছে অয়েল পামগাছের ফল। আদিবাসী ইন্ডিয়ানদের কাছে এই পাখিগুলো পরম আরাধ্য। আদিবাসীরা বাচ্চা অয়েলবার্ড থেকে বিশেষ প্রক্রিয়ায় এক ধরনের তেল বের করে নেয়। গন্ধহীন এই তেল রান্নাবান্না আর আলো জ্বালাবার কাজে ব্যবহৃত হয়।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct