নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদাঃ- লকডাউনে কোমর ভেঙে গিয়েছে। এবার শেষ আশাটুকুও শেষ হওয়ার উপক্রম। কালবৈশাখিতে ক্ষেতের ফসল তছনচ। প্রায় গোটা উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গ জুড়েই একই ছবি। ধানের ব্যাপক ক্ষতি। কৃষকদের মাথায় হাত।করোনা যা ক্ষতি করার করেই দিয়েছে। লকডাউনের নিয়ম শিথিল হওয়ার আগেই সব হারিয়ে পথে বসতে চলেছে বাংলার চাষিরা।এবার কালবৈশাখির জেরে আরও অনিশ্চয়তার মুখে রাজ্যেক কৃষকরা। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত সবজি ও ধান চাষিরা। জোড়া ধাক্কায় তাদের ভবিষ্যৎই অনিশ্চিত।লঙ্কা, বেগুন, করলা, শসা, উচ্ছে, পটলের মতো সবজির ক্ষেতও লন্ডভন্ড। ব্যাঙ্ক বা মহাজনের কাছে ঋণ শোধ হবে কি করে? জোড়া ধাক্কা সামলানো যাবে তো?দেশজুড়ে লকডাউন। চাষের কাজে হাজারো সমস্যা। বিক্রিরও উপায় নেই। তার ওপর কালবৈশাখি।
এমনই কালবৈশাখীর খামখেয়ালীপনায় মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকার চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। টানা বৃষ্টিতে ধানের ক্ষেতে জল। মাথায় হাত চাষীদের। প্রায় দুই সপ্তাহ থেকে বৃষ্টি শুরু হয় মালদা জেলার বিস্তৃর্ণ এলাকায়।কখনও ভারি তো আবার কখনো মাঝারি বৃষ্টি চলেছে। আর এই বৃষ্টির জেরে কপালে চিন্তার ভাঁজ মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকার ধানচাষীদের।হরিশ্চন্দ্রপুর-১ নং ব্লকের মহেন্দ্রপুর, তুলসীহাটা ,ভিঙ্গল ও কুশিদা জিপি সহ বহু এলাকার ধানচাষীরা ধান রক্ষা করার তাগিদে ঝড়-বৃষ্টি মাথায় করে নেমেছে ক্ষেতে।
হরিশ্চন্দ্রপুর-১ নং ব্লকের এইসব জিপির কিছু কিছু জায়গায় ধান পেকে তোলার সময় হয়ে এসেছে। এমতাবস্থায় হঠাৎ করে ঝড় বৃষ্টিতে ধানচাষের প্রবল ক্ষতির আশঙ্কায় চাষীদের। একদিকে যেমন গতকালের ঝড় বৃষ্টিতে পাকা ধানগাছ গুলিকে জমিতে ফেলে দিয়েছে। অপরদিকে একই ভাবে টানাবৃষ্টির জেরে ধান জমিতে জল জমেছে এর জেরেই চিন্তায় চাষীরা,আশঙ্কা ধান গাছে পচন ও ঝড়ে গাছ জমিতে পড়ে যাওয়ায় জলে ডুবে রয়েছে।
বৃষ্টি না থামলে ধানে আঁকুর এসে যাবে। বৃষ্টি কবে থামবে সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছে ধানচাষীরা। বৃষ্টি এভাবেই চলতে থাকলে জমি থেকে ধান কতোটা উদ্ধার সম্ভব হবে সে নিয়ে চিন্তায় চাষীরা। জমির আল কেটে জমা জল বার করে ধানকে রক্ষা করার চেষ্টায় ধানচাষীরা। ঠিক একই রকম ভাবে সমস্যায় পড়েছেন জেলার সবজি চাষিরাও। জমিতে জল জমে যাওয়ায় সবজি পচনের আশঙ্কা করছেন তারা।
হরিশ্চন্দ্রপুর-১ নং ব্লকের ভিঙ্গল জিপির আনেসুর রহমান, ওয়াজেদ আলি, জিয়াউল হক ও মহম্মদ নুহুরা জানান লকডাউনে কর্মহীন অবস্থায় ঘরে বসে রয়েছে। এবছর মাঠে ধান চাষ করে একটা আশা দেখেছিল। কিন্তু অকাল বৃষ্টিতে ধানের মুকুল ছড়ে যাওয়ায় জমির বেশির ভাগ শীষের গোড়া পচে গেছে। ধান সাদা হয়ে পাতান হয়ে গেছে বলে জানান।
এবছর তারা কৃষিঋণ নিয়ে ধান চাষ করেছিল। কিভাবে কৃষিঋণ পরিশোধ করবে তার চিন্তায় কপালে ভাঁজ পড়েছে। কৃষিঋণ মুকুবের পাশাপাশি কৃষিবিমার জন্য আবেদনও করেছেন তাঁরা।
হরিশ্চন্দ্রপুর-১ নং ব্লকের কৃষি আধিকারীক পলাশ সিদ্ধিয়া জানান, এবছর অকাল বৃষ্টিতে ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সরজমিন তদন্ত করে চাষির ক্ষতিপূরণ হিসেবে কৃষি বিমার কথা ভাবা হচ্ছে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct