রাজ্যের বিভিন্ন কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতিতে বহু রক্তক্ষরণের উদাহরণ থাকলেও সমাজসেবার কাজে তেমন উল্লেখযোগ্য কিছু আছে বলে মনে হয় না। হ্যাঁ জনমানসে প্রচলিত সব ধারনাকে পাল্টে দিতে অভিনব উদ্যোগ নিলো কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কারমাইকেল হস্টেলের আবাসিকরা । গত দুইদিন ধরে বেড়েছে শীতের প্রকোপ হুহু করে কমছে তাপমাত্রা। ফুটপাথ বাসীদের কষ্টও বেড়েছে সে কথা বলা বাহুল্য।আর সেই সব অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়িয়ে নজীর তৈরি করল কারমাইকেল হস্টেলের আবাসিকরা । শুধু শীতবস্ত্র বিতরণ নয় এর আগে উত্তরবঙ্গের বন্যায় মালদা, দক্ষিণ দিনাজপুর প্রভৃতি জেলায় ত্রাণ সামগ্রী বিলি করেও খবরের শিরোনামে আসে কারমাইকেল হস্টেল।
রাইহান সিদ্দিকী, সাহিদ আফ্রিদি, মনজুর হোসেন সহ প্রায় জনা বিশেক পড়ুয়ার মাথায় আসে কিছু করার। বন্ধুদের সঙ্গে আলোচনা করে হস্টেলের অন্যান্য আবাসিকদের কাছে অনুরোধ জানায় হাত বাড়ানোর। সকলেই দরাজ হাতে টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে জমাতে থাকে টাকা। হস্টেলের সিনিয়র আবাসিকরা হাত লাগিয়েছেন ছোটদের এই মহতী উদ্যোগে। বুধবার রাতে রাজাবাজার মোড় থেকে শুরু করে সূর্যসেন স্ট্রিট ধরে বৈঠকখানা রোডের প্রায় ৬০ জন মানুষের হাতে কম্বল তুলে দেন তারা। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বৈঠকখানা রোডের এই ছাত্র আবাসনে মুলত মুসলিম ছাত্ররা থাকে। ধর্মীয় সব বিধিনিষেধ মেনে আধুনিক শিক্ষা ও সংস্কৃতি চর্চায় রাজ্যে সুনাম রয়েছে ওই হস্টেলের। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মুসলিম পড়ুয়াদের একমাত্র ভরসাস্থল বলতে বেকার হস্টেল ও কারমাইকেল। রাজ্যের বহু বিদগ্ধ মানুষ যারা নিজ নিজ ক্ষেত্রে আজ প্রতিষ্ঠিত এক সময় তারা এই হস্টেলের আবাসিক ছিলেন। সম্প্রতি ন্যাকের পরিদর্শনে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯ টি হস্টেলের মধ্যে সবথেকে পরিস্কার ও পরিচ্ছন্ন হিসাবে তকমা পেয়েছে কারমাইকেল হস্টেল। তাতে ওই ধরনের সামাজিক কাজে অংশগ্রহণ নতুন পালক বলে মনে করছেন প্রাক্তনীরা। রাজ্যের মন্ত্রী আবদুর রেজ্জাক মোল্লা, আব্দুস সাত্তার, সাংসদ আহমেদ হাসান ইমরান প্রমুখ ওই হস্টেলের সফল ও সম্মানীয় প্রাক্তনী।